বিমান টিকিট বুকিংয়ে পাসপোর্ট কপি লাগবে

এখন থেকে যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট নম্বর, পাসপোর্ট কপি ব্যতীত যাতে টিকিট বুকিং করা না যায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ থেকে বিদেশ ভ্রমণের বিভিন্ন পর্যায়ে বিমান টিকিটের উচ্চমূল্য পর্যালোচনাসহ যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে এক জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মন্ত্রণালয়ের সভায় এয়ার টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণগুলো চিহ্নিত করা হয়। প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো নাম, পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়া গ্রুপ বুকিং, যেখানে বিভিন্ন এজেন্সি যাত্রীদের প্রয়োজনীয় নথিপত্র ছাড়াই ই-মেইলের মাধ্যমে সিট ব্লক করে রাখে। এতে টিকিট মজুতদারি ও সিন্ডিকেট তৈরি হয়, যার ফলে আসন সংকট দেখা দেয় ও টিকিটের মূল্য বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যগামী ফ্লাইটগুলো আগেভাগেই আসন বিক্রি নিশ্চিত করতে এই পদ্ধতি অনুসরণ করে। এছাড়া, ওমরাহ, শ্রমিক ও শিক্ষার্থী পাঠানোর ক্ষেত্রে নামবিহীন ওপেন গ্রুপ সিট বুকিংও মূল্যবৃদ্ধির একটি কারণ। পাশাপাশি, কিছু এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বন্ধ হওয়ায়ও টিকিটের দাম বেড়েছে বলে সভায় উল্লেখ করা হয়।

সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এখন থেকে যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট নম্বর, পাসপোর্ট কপি ব্যতীত যাতে টিকিট বুকিং করা না যায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে। আজ থেকে বুকিং করা টিকিট বুকিংয়ের পরবর্তী ৩ দিনের (৭২ ঘণ্টা) মধ্যে ইস্যু না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এয়ারলাইন্স সেই টিকিট বাতিল নিশ্চিত করবে। ইতোমধ্যে বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত এয়ারলাইন্স/ট্রাভেল এজেন্সির গ্রুপ বুকিংয়ের মাধ্যমে ব্লক করা টিকিট আগামী ৭ দিনের মধ্যে ভ্রমণকারী যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট নম্বরসহ (পাসপোর্টের কপিসহ) টিকিট ইস্যু নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় তিন দিনের মধ্যে এয়ারলাইন্স তা বাতিল নিশ্চিত করবে।

মন্ত্রণালয় জানায়, এয়ার টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে, যেখানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থার বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ থাকবে। পাশাপাশি, টিকিটের মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির জন্য ১৩ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দফতর ও সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।