নিজস্ব প্রতিবেদক: দিনভর কাস্টমস কর্মকর্তাদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি বিমানবন্দরে বিমান ফ্লাইট ক্যাটারির সেন্টার বা বিএফসিসি-তে। অবশেষে সাত ঘণ্টা পর আট কেজি সোনার বারসহ বিমানের এক কর্মীকে আটক করেছে ঢাকা কাস্টম হাউস প্রিভেন্টিভ টিম। এর আগে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বিএফসিসি-তে প্রবেশ করতে গিয়ে কর্মকর্তাদের বাধার মুখে পড়ে কাস্টমস কর্মকর্তারা। তবে বাধা উপেক্ষা করে দিনভর কৌশলী পদক্ষেপ নিয়ে বিএফসিসি গেইটের সামনে থেকে ওই ব্যক্তিকে আটক করতে সমর্থ হন কাস্টমস কর্মকর্তারা। ঢাকা কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার (প্রিভেন্টিভ) মো. সানোয়ারুল কবীর এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মো. সানোয়ারুল কবীর জানিয়েছেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উত্তর পাশে বিমানবন্দরের সঙ্গে লাগোয়া ভবনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ক্যাটারিং সেন্টার। যেখানে বিমানের ফ্লাইটের খাবার রান্না করে সরবরাহ করা হয়। ভবনটি বিমান ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টার বা বিএফসিসি নামে পরিচিত। বিমানবন্দরের সঙ্গে যুক্ত থাকায় বিএফসিসি থেকে বিমানবন্দরের এপ্রোন এলাকায় প্রবেশ করা যায়। এক্ষেত্রে বিএফসিসি’র কর্মীদের প্রবেশে বিমানের নিরাপত্তা কর্মীরা তল্লাশি করে থাকেন। সেখানে এভিয়েশন সিকিউরিটি কিংবা কাস্টমসের কোনও তল্লাশির সুযোগ নেই। সেখানে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে বিএফসিসি-র কর্মীদের কাছ থেকে এবং প্রতিষ্ঠানটির গাড়ি থেকে সোনা উদ্ধারের ঘটনাও ঘটেছে।
তিনি জানিয়েছেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল, দুবাই থেকে আসা একটি ফ্লাইটে সোনার চালান আসবে। বিএফসিসি-র প্যান্ট্রিম্যান মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ আকন্দ দুবাই থেকে আসা সোনার চালান নিয়ে বের হবে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে আমরা দুপুর ১টার দিকে বিএফসিসি-তে প্রবেশ করতে গেলে বাধার মুখে পড়ি। সেখানে আমাদের কোনোভাবেই প্রবেশ করতে দেননি সেখানকার কর্মকর্তারা। দুটি গেইটের একটি গেইট দিয়েও প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না কাস্টম কর্মকর্তাদের। বিমানের ক্যাটারিং সেন্টার নানা টালবাহানা করা হয়। এরপর গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই এর মাধ্যমে বিমানের ক্যাটারিং সেন্টারে প্রবেশ করে কাস্টম কর্মকর্তারা। তখন ক্যাটারিং সেন্টার থেকে জানানো হয় আব্দুল আজিজ দুপুর ১টা ৪৯ মিনিটের দিকে অফিস থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে ৩টার দিকে বিএফসিসি’র কর্মকর্তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলেন।
সানোয়ারুল কবির আরও জানান, এরপর দুপুর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিমানের ক্যাটারিং অফিসের গেইটের সামনে কাস্টমসের দুইজন ব্যক্তি নজরদারিতে থাকেন। অতপর রাত ৮টার দিকে সোনা চোরালকারী আব্দুল আজিজ বিমানের ক্যাটারিং অফিসের গেইটের সামনে আসেন। এসময় কাস্টম কর্মকর্তারা আব্দুল আজিজকে আটক করেন। অতপর আব্দুল আজিজকে তল্লাশী করে তার কাছ থেকে কালো স্কসটেপ দিয়ে মোড়ানো ৪টি সোনার বারের বান্ডেল উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক ওজন প্রায় ৮ কেজি। উদ্ধার হওয়া এই সোনার বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা। তিনি বলেন, দেশে আসা এই সোনা দুবাই ফেরত একটি বিমানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসে। এরপর আব্দুল আজিজের মাধ্যমে এই সোনা পাচার হওয়ার কথা ছিলো। আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইন এবং কাস্টমস আইনে মামলা দায়ের করা হবে।