বেসরকারি খাতের দি সিটি ব্যাংক মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশের গ্রাহকদের জন্য ডিজিটাল ঋণের সীমা বাড়িয়েছে। এতদিন পর্যন্ত গ্রাহকেরা ঋণমানের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারতেন। এখন সেই সীমা বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। বুধবার (১৮ জুন) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিকাশ জানায়, এখন থেকে যোগ্য গ্রাহকেরা বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে যেকোনো সময়, প্রয়োজনমতো জামানত ছাড়াই সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। কারা কত ঋণ পাবেন, তা নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের লেনদেনের ইতিহাস ও ঋণমানের ওপর।
বিকাশ জানিয়েছে, এত দিন ডিজিটাল ন্যানো ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ছিল ৩০ হাজার টাকা। তবে গ্রাহকের চাহিদা, আস্থা এবং দ্রুত ঋণ পাওয়ার সুবিধা বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী এই সীমা বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। সিটি ব্যাংক ও বিকাশের যৌথ উদ্যোগে ২০২১ সালে ডিজিটাল ন্যানো ঋণসেবা চালু হয়। শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১০ লাখের বেশি গ্রাহক বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে সিটি ব্যাংক থেকে ৫৫ লাখবারেরও বেশি ঋণ নিয়েছেন। মোট ঋণের পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিকাশ গ্রাহকেরা অ্যাপের ‘লোন’ আইকনে ট্যাপ করে মাত্র কয়েক ধাপে সিটি ব্যাংক থেকে তাৎক্ষণিকভাবে ৫০০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ডিজিটাল ঋণ নিতে পারবেন। এই ঋণের পরিশোধের সর্বোচ্চ সময়সীমা ছয় মাস। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি ডিজিটাল হওয়ায় ব্যাংকে যেতে বা কোনো কাগজপত্র জমা দিতে হবে না।
বিকাশ অ্যাকাউন্টে গ্রাহকের লেনদেনের ইতিহাস এবং সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট নীতিমালা অনুযায়ী একটি স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্রাহকের ঋণগ্রহণের যোগ্যতা ও ঋণের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। আর যারা এখনো এই ডিজিটাল ঋণসেবার আওতায় আসেননি, তারা নিয়মিতভাবে বিকাশের অ্যাড মানি, সেভিংস ও পেমেন্টসহ বিভিন্ন সেবা ব্যবহার করলে ভবিষ্যতে ঋণ পাওয়ার উপযুক্ততা অর্জন করতে পারেন।
ঋণ তোলার ও পরিশোধের প্রক্রিয়া
ডিজিটাল ঋণ নিতে হলে প্রথমে বিকাশ অ্যাপের ‘লোন’ আইকনে ট্যাপ করে সিটি ব্যাংকের নির্ধারিত সীমার মধ্যে কাঙ্ক্ষিত অর্থের পরিমাণ নির্বাচন করতে হবে। এরপর ঋণের শর্তাবলি ভালোভাবে পড়ে সম্মতি দিতে হবে। এরপর বিকাশ অ্যাকাউন্টের পিন দিয়ে ট্যাপ ধরে রাখলেই তাৎক্ষণিকভাবে ওই অ্যাকাউন্টে ঋণের অর্থ জমা হয়ে যাবে।
ঋণের ধরন অনুযায়ী গ্রাহককে মাসিক কিস্তির মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করতে হবে। নির্ধারিত তারিখে কিস্তির টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিকাশ হিসাব থেকে কেটে নেওয়া হবে। তবে চাইলে গ্রাহক মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই আংশিক বা সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন। এই ক্ষেত্রে কেবল ব্যবহৃত সময়ের জন্য সুদ দিতে হবে এবং আগাম পরিশোধে কোনো অতিরিক্ত চার্জ কাটা হবে না। বিকাশ জানিয়েছে, কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা ও সাফল্যের ভিত্তিতে ডিজিটাল ঋণসেবা দেশের আর্থিক প্রযুক্তি খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণে পরিণত হয়েছে। এ কারণে গ্রাহকদের জন্য ঋণের সীমা আরও বাড়ানো হয়েছে।