বিএসবি গ্লোবালের চেয়ারম্যান খায়রুল বাশার গ্রেপ্তার

মানিলন্ডারিং মামলায় বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান লায়ন এম কে খায়রুল বাশার বাহারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। রোববার (১৩ জুলাই) সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের একটি দল তাকে আটক করে। ইউনিটটির এসএস মোহাম্মদ বাসির উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, খায়রুল বাশারের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

এর আগে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। বিদেশে উচ্চশিক্ষার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে সিআইডি জানতে পারে, বিএসবি গ্লোবালের মালিক খায়রুল বাশার বাহারের নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুটি মৌজায় ১ হাজার ১০৬ শতাংশ জমি রয়েছে। এসব জমির দলিল মূল্য ১০২ কোটি টাকার বেশি হলেও বাজারমূল্য প্রায় ৬০০ কোটি টাকা বলে ধারণা করছেন জমি বিশেষজ্ঞরা।

এছাড়াও রাজধানীর গুলশান, বারিধারা ও বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় বিএসবি গ্লোবালের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে একাধিক ফ্ল্যাট, ভবন ও জমির তথ্য পেয়েছে সিআইডি। গত মে মাসে সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধনে প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার প্রমাণ মিলেছে।

ওই সময় সিআইডি সূত্রে জানা যায়, বিএসবি গ্লোবালের মাধ্যমে অন্তত ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক প্রতারিত হয়েছেন। তাদের কাছ থেকে শত কোটি টাকার বেশি আদায় করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই অর্থ দিয়েই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ গড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এ ঘটনায় গত ৪ মে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে বিএসবি গ্লোবালের চেয়ারম্যান খায়রুল বাশার, তার স্ত্রী খন্দকার সেলিমা রওশন ও ছেলে আরশ ইবনে বাশারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে সিআইডি। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও চার থেকে পাঁচজনকেও আসামি করা হয়েছে।

মামলার বিবরণে বলা করা হয়েছে, বিএসবি গ্লোবাল শিক্ষার্থীদের অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে প্রতারণা করেছে।

সিআইডির তদন্তে উঠে এসেছে, বিএসবি গ্লোবাল ভুয়া অফার লেটার, বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন এবং ভিজিট ভিসার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা আদায় করেছে। বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি দেওয়ার কথা বললেও শিক্ষার্থীদের নামে কোনো অর্থ জমা দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। তদন্তে আরও জানা যায়, খায়রুল বাশার ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রতারণার মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা রেখে পরে চেকের মাধ্যমে তা স্থানান্তর করেছেন।

ভুক্তভোগীরা অর্থ ফেরত চাইলে বিএসবি গ্লোবাল কখনও শিক্ষার্থী, কখনও তাদের প্রতিনিধি বা অভিভাবকের নামে ব্যাংক চেক ইস্যু করে। তবে এসব চেক ডিজঅনার (বাউন্স) হওয়ায় অনেকে নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্টস অ্যাক্ট-এর আওতায় মামলা দায়ের করেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!