নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে অবৈধ বালু মহালের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশসহ যৌথবাহিনী সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী অভিযান চালায়। এতে চরএলাহী, চরফকিরা ও মুছাপুর ইউনিয়নের ছোট ফেনী ও বামনীয়া নদী থেকে প্রায় ৮ কোটি ২০ লাখ টাকার সামগ্রী জব্দ করা হয়।
অভিযানে ১৮ জনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর ফরহাদ শামীম।
প্রশাসন জানায়, ছোট ফেনী ও বামনীয়া নদীতে প্রতিদিন অসংখ্য অবৈধ বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল করে। বারবার নিষেধাজ্ঞা জারির পরও এসব কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। এর ফলে নদীর তীরে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে, বসতবাড়ি ও স্থাপনা ঝুঁকির মুখে পড়েছে। বাতাসে উড়ে আসা বালুতে বহু শিক্ষার্থী ও পথচারী চোখের রোগ ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ নিয়ে স্থানীয়রা ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন একাধিক মানববন্ধন করেছে। এমনকি চরএলাহী সেতুসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও এখন মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে অবৈধ বালুমহলের চিত্র দেখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ শামীম। পরে তিনি বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযান চালান। এতে ৭টি বালুবাহী বাল্কহেড (ট্রলার), ৯টি ড্রেজার মেশিন এবং পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে মজুদ থাকা কয়েক লাখ ঘনফুট বালু জব্দ করা হয়। জব্দ হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো— নিউ মক্কা ট্রেডার্স, সেজান এন্টারপ্রাইজ, মদিনা ট্রেডার্স, নোয়াখালী ট্রেডার্স ও জেএসএস ট্রেডার্স।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ শামীম জানিয়েছেন, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে একজনকে ২০ দিন এবং বাকি ১৭ জনকে ১০ দিন করে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এই সাজা ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি, ধারার ১৮৮ অনুযায়ী দেওয়া হয়েছে। মালিকপক্ষের কেউ উপস্থিত না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনে মামলা দায়ের করা হবে। তিনি আরও জানান, অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সব বালুমহাল বন্ধ করা হয়েছে। জব্দকৃত প্রায় ৮ কোটি ২০ লাখ টাকার বাল্কহেড, ড্রেজার মেশিন ও বালু প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও চালিয়ে যাওয়া হবে।