বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার এবং স্থলবাণিজ্যে বিধিনিষেধ আরোপের জন্য ভারতও ভুগবে, সে কথা স্বীকার করলেন দেশটির নৌমন্ত্রী সর্বনন্দ সনোয়াল। তিনি বলেন, এর ফলে ‘ইন্দো-বাংলাদেশ প্রটোকল রুটে’ (আইবিপি) ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে পশ্চিম অংশের বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বাংলাদেশের জলসীমা ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে কলকাতার নৌ-সংযোগ স্থাপন করা হয়েছিল। তবে ‘দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন’ জানিয়েছে, ইন্দো-বাংলাদেশ প্রটোকল রুটে কার্গো পরিবহন ২০ শতাংশ কমে গেছে। এদিকে, বিশ্বের দীর্ঘতম রিভার ক্রুজ ‘এমভি গঙ্গা বিলাস’ এখন বাংলাদেশের জলসীমা এড়িয়ে বিকল্প ও সংক্ষিপ্ত পথ খুঁজছে। এমনকি এই নৌযানটি পর্যাপ্ত যাত্রীও পাচ্ছে না।
বাংলাদেশে ক্ষমতা পরিবর্তনের পর, গত ৮ এপ্রিল ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তি বাতিল করেছে। এই চুক্তির অধীনে বাংলাদেশ ভারতের স্থল শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানি করত। ভারতের স্থলবন্দর ও বিমানবন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য পৌঁছাত ইউরোপ, পশ্চিম এশিয়া ও অন্যান্য অঞ্চলে।
তবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পরিবর্তনের পর, ভারত এই চুক্তি বাতিল করে। তারা প্রাথমিকভাবে নিজেদের বন্দর ও বিমানবন্দরে লজিস্টিক চ্যালেঞ্জ এবং জটের কথা উল্লেখ করে। এরপর ১৫ এপ্রিল বাংলাদেশ তার বন্দর ব্যবহার করে ভারত থেকে সুতা আমদানি বন্ধ করে দেয়। এতে ভারতের টেক্সটাইল মিলগুলোর সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘ্ন ঘটে। বিশেষ করে যেসব মিল রঙ করা ও ভ্যাট বসানো সুতা রপ্তানি করত, তারা বড় ধরনের সমস্যায় পড়ে।
এরপর ভারত পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ সাতটি পণ্য স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ‘দ্য হিন্দু বিজনেস লাইন’ জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ‘গভীর’ বা ‘বিশাল’। এখন ভারত শুধু কলকাতা ও মুম্বাইয়ের নবসেবা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক আমদানি করছে। অন্যদিকে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়, মিজোরাম এবং পশ্চিমবঙ্গের ফুলবাড়ী ও চেংড়াবান্ধাসহ মোট ১১টি স্থলবন্দর দিয়ে সাতটি পণ্যের আমদানি আপাতত বন্ধ রয়েছে।