ব্যবসায়ীরা আগামী অর্থবছরে বাড়তি করের চাপে পড়বেন বলে মনে করছে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)। করপোরেট কর বৃদ্ধির পাশাপাশি লাভ-ক্ষতিনির্বিশেষে উৎসে কর বাড়ানোর কারণে এই চাপ তৈরি হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। বুধবার (৪ জুন) কারওয়ান বাজারের আইসিএবি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাজেট-পরবর্তী প্রতিক্রিয়া জানায় আইসিএবি। এতে বক্তব্য দেন আইসিএবির সভাপতি মারিয়া হাওলাদার, প্রধান নির্বাহী শুভাশীষ বসু ও সাবেক সভাপতি হুমায়ূন কবির। এ সময় স্নেহাশীষ মাহমুদ অ্যান্ড কোংয়ের অংশীদার স্নেহাশীষ বড়ুয়া একটি উপস্থাপনা উপস্থাপন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, টার্নওভার করের হার ব্যক্তিখাতে ০.২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ এবং প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ০.৬ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ করা হয়েছে, যা করদাতাদের জন্য উদ্বেগজনক হতে পারে। আইসিএবি মনে করে, প্রতিষ্ঠানের টার্নওভারের ওপর ন্যূনতম কর আরোপ করনীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। শুধুমাত্র লাভের ভিত্তিতে কর নির্ধারণ করা উচিত। এ কারণে এই কর তুলে দেওয়ার সুপারিশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
আইসিএবি বলছে, আগামী দুই বছর ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হলেও এটি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য তেমন স্বস্তি আনবে না। তবে আগামী অর্থবছর থেকে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি, জাতীয় বাজেটে দেশের নারীদের অবৈতনিক ও অস্বীকৃত গৃহস্থালি ও সেবামূলক কাজের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির প্রতিশ্রুতিকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে আইসিএবি।
স্নেহাশীষ বড়ুয়া জানান, নতুন বাজেটে তালিকাভুক্ত ও অ তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারে পার্থক্য বেড়েছে। যারা শেয়ারবাজারে ১০ শতাংশ শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে ছাড়বে, তাদের করহার হবে ২২.৫ শতাংশ। আর সব লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পন্ন করলে করহার আরও কমে দাঁড়াবে ২০ শতাংশে। তবে অন্যসব কোম্পানিকে ২৭.৫ শতাংশ কর দিতে হবে। ফলে যারা ১০ শতাংশের কম শেয়ার ছাড়বে, তারা এই করসুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে।
আইসিএবির সাবেক সভাপতি হুমায়ূন কবির বলেন, ব্যবসার জন্য সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি এবং করহারও বাস্তবসম্মত হওয়া উচিত। তিনি উল্লেখ করেন, আগেও অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হলেও তেমন কার্যকর হয়নি।