বার্তা প্রতিবেদক: ২০২২ সালের জানুয়ারিতে গঠিত হয়েছে বাংলাদেশ কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাকাএভ) সর্বশেষ কমিটি; যা ইতোমধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। সাধারণ সভার মাধ্যমে গঠনতন্ত্র চূড়ান্তকরণ ও মেয়াদোত্তীর্ণ বাকাএভ কমিটি বিলুপ্ত করে নির্বাচন চেয়েছেন সদস্যরা। এরই মধ্যে আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্ত না থাকা সত্ত্বেও ‘বাকাএভ’ সভাপতির শুন্য পদে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব প্রদানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কার্যনির্বাহী কমিটির উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি সদস্যের মতামত অগ্রাহ্য করে নেয়া সিদ্ধান্ত জানিয়ে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে সদস্যদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সম্প্রতি বাকাএভ এর কার্যকরী সভাপতি মো. মিজানুর রহমান ও কার্যকরী মহাসচিব মো. মজিবুর রহমান সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাকাএভ রাজস্ব কর্মকর্তা ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাদের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। দীর্ঘ পথ পরিক্রমার পর ২০২০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে সদস্যরা বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে ভোট প্রদান করেন। কিন্তু বাকাএভ-এর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিনটি অঞ্চল কমিটির মধ্যে ন্যূনতম দুইটি অঞ্চলের বাকাএভ প্রতিনিধি না পাওয়ায় পূর্ণাঙ্গ বাকাএভ কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। সংকট উত্তরণে তিনটি অঞ্চলের কমিটি বিলুপ্ত করে ‘ওয়ান কাস্টমস, ওয়ান বাকাএভ’ সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০২২ সালের ২৯ জানুয়ারি বাকাএভ এর নির্বাচিত ও সক্রিয় সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে সভাপতি, কার্যকরী সভাপতি, মহাসচিব ও কার্যকরী মহাসচিব এই চার সদস্য বিশিষ্ট একবছর মেয়াদের বাকাএভ কমিটি গঠন করা হয়।
আরও বলা হয়েছে, একই বছরের ৩০ জুলাই সভাপতি সমপদ মর্যাদার কার্যকরী সভাপতি এবং মহাসচিব সমপদ মর্যাদার কার্যকরী মহাসচিবের সমন্বিত সইয়ে বিদ্যমান তিনটি অঞ্চল কমিটি বিলুপ্ত করে ২৬১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বাকাএভ কমিটি গঠন করা হয়। আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত কমিটির পাশাপাশি গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটিও গঠন করা হয়। ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল বাকাএভ সভাপতি খন্দকার লুৎফল আজম সহকারী কমিশনার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হওয়ায় বাকাএভ সভাপতি পদে তাঁর দায়িত্ব পালনের সুযোগ না থাকায় গঠনতন্ত্র সংশোধন সম্পন্ন করাও সম্ভবপর হয়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি বছরের ২ মার্চ বাকাএভ মহাসচিব গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির সভা আহ্বান করেন। ওই সভায় মহাসচিব সভাপতির শূন্য পদ পূরণের প্রস্তাব করলে উপস্থিত সদস্যের মধ্যে ৫ থেকে ৬ জন ব্যতীত বাকি ২৫ থেকে ২৬ জন সদস্য সাধারণ সভার মাধ্যমে কমিটি পুনর্গঠনের বিষয়ে মতামত প্রদান করেন। এক পর্যায়ে মহাসচিব সভা মুলতবি করেন এবং পরবর্তী সভায় এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানান। এর মধ্যে উপস্থিত সদস্যদের প্রায় সবাই বাকাএভ কার্যালয় ত্যাগ করেন। কিন্তু ৩ মার্চ হঠাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাবেক সভাপতি ও মহাসচিব সই করা একটি বিবৃতি দেখা যায়, যাতে বাকাএভ সভাপতির শূন্য পদের বিপরীতে বাকাএভ এর দ্বিতীয় সহ সভাপতি মো. মাজহারুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মর্মে দেখা যায়। তৎক্ষণাৎ ২৬১ সদস্য বিশিষ্ট বাকাএভ কমিটির বিভিন্ন পদের নেতারা সাধারণ সদস্যদের বাকাএভ এর কার্যকরী সভাপতি ও কার্যকরী মহাসচিবের কাছে অভিযোগ জানান এবং সাধারণ সদস্যদের জ্ঞাতার্থে প্রকৃত ঘটনা জানানোর অনুরোধ করেন।
আরও বলা হয়েছে, প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিটি প্রাথমিকভাবে অপপ্রচার মনে হয়। পরে বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হলে এর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ২ মার্চ এর বাকাএভ সভায় উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আলোচনা হয়। কিন্তু সেই সভায় উপস্থিত কোন সদস্যই এই বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান। ফলে ৩ মার্চ প্রকাশিত সভাপতির শূন্য পদ পূরণের সিদ্ধান্তটি বাকাএভ এর কার্যনির্বাহী কমিটি কর্তৃক গৃহীত নয় বলে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়।
গত ২ মার্চ বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে বাকাএভ এর একজন সদস্য স্ত্রী সন্তানসহ মৃত্যুবরণ করেন। বাকাএভ সদস্যের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে বাকাএভ সভাপতি ও মহাসচিবের সই করা একটি শোক বার্তা সকলের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। যাতে সভাপতির সই নকল বা জাল করার গুরুতর অভিযোগ জানিয়েছেন বাকাএভ সদস্যরা এবং সই জালকারীর বিরুদ্ধে যথাযথ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবিও করেন তারা। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে একটি সাধারণ সভার মাধ্যমে মেয়াদোত্তীর্ণ বাকাএভ কমিটি বিলুপ্ত করে এবং গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করে সে মোতাবেক নির্বাচন আয়োজন করার উদ্যোগ খুব তাড়াতাড়ি দৃশ্যমান হবে। একইসঙ্গে প্রচারিত ভুয়া বিজ্ঞপ্তিতে সদস্যদের বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সকল সদস্যদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
***