যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই ভারতীয় পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরও ২৫ শতাংশ শুল্কের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার বাজারে রপ্তানি করতে সমস্যা হচ্ছে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের। চড়া শুল্কের কারণে বিপাকে পড়েছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে কিছু ব্যবসায়ী কৌশল অবলম্বন করে এই সংকট কাটানোর চেষ্টা শুরু করেছেন। তারা বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন এবং মূলত বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করার পরিকল্পনা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের পণ্যে মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বাণিজ্য সমঝোতা না হলে এটি ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে পারে। বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশেও ট্রাম্প শুল্ক আরোপ করেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশের পণ্যে মার্কিন শুল্ক ২০ শতাংশ এবং চীনের পণ্যে ৩০ শতাংশ। ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হলে ভারতের পণ্যের শুল্ক সর্বোচ্চ হবে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের বিভিন্ন বাজারে আমেরিকা থেকে আসা ক্রয়াদেশগুলো বাতিল হচ্ছে।
মার্কিন ক্রেতারা ভারতীয় ক্রয়াদেশ স্থগিত করছেন বা একেবারে বাতিল করার কথা ভাবছেন। বিকল্প হিসেবে তারা কম শুল্ক আরোপিত দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন, যার মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বহু আমেরিকান সংস্থা বাংলাদেশের কারখানায় পোশাক তৈরি করার ক্রয়াদেশ দিচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে, ভারতের বাতিল করা ক্রয়াদেশগুলো এখন বাংলাদেশে যাচ্ছে। এমনকি ভারতের বড় ব্যবসায়ীরাও বাংলাদেশের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। দীর্ঘমেয়াদে মার্কিন বাজার ধরে রাখার কৌশল হিসেবে তারা বাংলাদেশকে মধ্যবর্তী হিসেবে রেখে এগোতে চাইছেন। ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের শীর্ষ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের ওপর শুল্ক তুলনামূলকভাবে কম থাকায় আমেরিকা থেকে ক্রয়াদেশ দিন দিন বাড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কারখানার শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-র একজন পরিচালক জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছরের ক্রয়াদেশ কয়েকগুণ বেড়েছে, যা রপ্তানির পরিমাণও বাড়াবে। তবে এটি কতটা স্থায়ী হবে, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। কারণ, ভারতের সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্যচুক্তি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। শুল্ক আবার কমলে মার্কিন ক্রেতারা ভারতের ব্যবসায়ীদের দিকে ফিরে যেতে পারেন।
এদিকে ট্রাম্পের নতুন শুল্ক ঘোষণার পর চীনের অনেক বিনিয়োগকারী বাংলাদেশের বাজারে মনোযোগ দিতে চাইছেন। পোশাক খাত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চীনের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে পোশাক তৈরির কারখানা স্থাপন করতে আগ্রহী এবং সেই অনুযায়ী বিনিয়োগের সিদ্ধান্তও গ্রহণ করেছেন।
** পাল্টা শুল্ক ও কর্মবিরতিতে পোশাক রপ্তানি ১২% হ্রাস
** জুনে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ৪৪% বৃদ্ধি
** পোশাক রপ্তানিতে মূল্য সংযোজন কমে ৫৮.৯০ %
** নতুন বাজারে পোশাক রপ্তানির ধীর গতি
** তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি, তবে সামনে সংকট
** ইইউতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে ৪.৮৬% প্রবৃদ্ধি
** ছয় মাসে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ১৩%