ব্যাংকগুলোতে বহুল আলোচিত থার্মেক্স গ্রুপ ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের দায়-দেনা-সম্পদের পরিমাণ কত, সেসবের তথ্য চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বুধবার (৫ ডিসেম্বর) কয়েকটি বাণিজ্যিক ব্যাংক এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশন থেকে তফসিলি ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে থার্মেক্স গ্রুপ ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের দায়দেনা বিবরণীর তথ্য ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি খাতের সোনালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংক থেকে থার্মেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোর নেওয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে কিছু ঋণ খেলাপি হলেও আদালতের আদেশে তা স্থগিতাদেশ রয়েছে। এ ছাড়া সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল), ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ও এনআরবিসিসহ অনেক ব্যাংকে গ্রুপটির ঋণ রয়েছে। থার্মেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলো হলো থার্মেক্স ব্লেন্ডেড ইয়ার্ন লিমিটেড, আদুরী অ্যাপারেলস লিমিটেড, থার্মেক্স টেক্সটাইল, থার্মেক্স স্পিনিং, থার্মেক্স মিলেঞ্জ স্পিনিং, থার্মেক্স নিট ইয়ার্ন, থার্মেক্স ইয়ার্ন ডাইং, থার্মেক্স ইয়ার্ন ডাইড ফেব্রিকস, থার্মেক্স ওভেন ডাইং, থার্মেক্স চেক ফেব্রিকস, সিস্টার ডেনিম কম্পোজিট, ইন্ডিগো স্পিনিং লিমিটেড, আদুরি নিট কম্পোজিট লিমিটেড।
সূত্রমতে, বহুল আলোচিত থার্মেক্স গ্রুপ বিভিন্ন ঋণ অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল কাদির মোল্লা। তিনি বেসরকারি খাতের সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স (এসবিএসি) ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। মূলত তৈরি পোশাক খাতের থার্মেক্স গ্রুপ রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ও রূপালী ব্যাংক থেকে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা নিয়েছে। যা দীর্ঘদিন ধরে পরিশোধ করছে না। ফলে ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। নতুন আইনে ‘ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি’ হিসেবে যা বিবেচিত। কিন্তু তারপরও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বিশেষ সুবিধা পেয়ে প্রতিষ্ঠানটি ঋণ পুনর্গঠন করেছে। থার্মেক্স গ্রুপের ঋণ সম্প্রতি রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকে গ্রাহকের একক ঋণসীমা অতিক্রম করেছে। এ ছাড়া তাদের ফোর্স লোনেরও মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে।
সরকারি ব্যাংকের মতোই আবদুল কাদির মোল্লার প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেসরকারি ব্যাংকগুলো ঋণ দিয়ে দুর্দশার মধ্যে আছে। বারবার পুনঃতফসিল করতে হচ্ছে তার ঋণ। অনাদায়ি সুদ যুক্ত হওয়ায় প্রতিনিয়ত গ্রুপটির কাছে ব্যাংকগুলোর ঋণের পরিমাণ বাড়ছে।