বরিশাল সিটি করপোরেশন অপরাধ দমনে ৪২০টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছিল, যার জন্য ব্যয় হয় আড়াই কোটি টাকা। তবে বেশিরভাগ ক্যামেরাই চুরি হয়ে গেছে, আর অবশিষ্টগুলো অকেজো। ফলে পুরো নগরী এখন নজরদারির বাইরে রয়েছে।
বিসিসি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০টি ওয়ার্ডে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়। ৭০টি বুথ স্থাপন করা হলেও, এখন প্রায় সবই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ক্যামেরাগুলোর সঙ্গে চুরি হয়ে গেছে ক্যাবলও, ফলে অপরাধীদের শনাক্ত করতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ।
বিসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন, ক্যামেরা প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট ছিল না। ফলে ক্যামেরাগুলো ধীরে ধীরে অচল হয়ে পড়ে এবং চুরি হয়ে যায়। ক্যামেরাগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সিটি করপোরেশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না। সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর নগরীর প্রায় সব সিসিটিভি ক্যামেরা ও ক্যাবল চুরি হয়ে যায়। এমনকি নগর ভবনের ৭০টি ক্যামেরাও নিয়ে যায় চোরেরা।
বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী বলেন, সিটি করপোরেশনের গাফিলতি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে এবং নষ্ট ক্যামেরাগুলো দ্রুত স্থাপন করা হবে। অন্যদিকে, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) নগরীতে ২০৭টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছে, যা অপরাধ ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০২১ সালে সিসিটিভি ব্যবহার করে ২৬৪টি অপরাধ চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিএমপির ইন্টিগ্রেটেড কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেকশনের মাধ্যমে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা চলছে। তবে সিটি করপোরেশনের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো না থাকায় আসন্ন রমজান মাসে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চিন্তিত পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার ( ২৭ ফেব্রুয়ারি ) আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এক আলোচনা সভায় সিসিটিভি ক্যামেরার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়, যেখানে তিন হাজারের বেশি সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করে অপরাধ নিয়ন্ত্রণের কথা উঠে আসে।
সনাক সভাপতি অধ্যক্ষ জাহিদ হোসেন বলেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সিসিটিভি ক্যামেরার ভূমিকা অপরিসীম। দ্রুত নষ্ট ক্যামেরাগুলো পুনঃস্থাপন করে নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।