ফোরজির সর্বনিম্ন গতি হবে ১০ এমবিপিএস

কিউওএস নীতিমালা সংশোধন

টেলিকম সেবার মান নিশ্চিত করতে কোয়ালিটি অব সার্ভিস (কিউওএস) নীতিমালা সংশোধন করেছে বিটিআরসি। এতে ড্রাইভ টেস্ট মানদণ্ডে অপারেটরদের ফোরজি সেবার সর্বনিম্ন গতি ১০ এমবিপিএস থাকতে হবে। এতে কমানো হয়েছে কলড্রপের সর্বনিম্ন হার। এছাড়া বাড়ানো হয়েছে সেবার বিভিন্ন মানদণ্ড সূচক। এসব মানদণ্ডে অপারেটরদের বাধ্যতামূলকভাবে মাসিক প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। বিটিআরসি বলছে, কোয়ালিটি অব সার্ভিস বেঞ্চমার্ক সময়োপযোগী ও বাস্তবসম্মত করা হয়েছে। শিগগির হালনাগাদ এ নির্দেশিকা জারি করা হবে।

রোববার (৩১ আগস্ট) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এক ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, এই কোয়ালিটি অব সার্ভিস (কিউওএস) বেঞ্চমার্ক টেলিযোগাযোগ খাতে নাগরিকদের মানসম্মত সেবা নিশ্চিতে সেবাদাতাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে। একইসঙ্গে সেবার মান উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

সংশোধিত এই কিউওএসে যা আছে

নেটওয়ার্ক লেভেল (পর্যায়ে) এ কল সেটাপ সাকসেস রেটের হার অন্তত ৯৯% হতে হবে, আর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তা ৯৮%। কলড্রপের হার টুজি নেটওয়ার্কে সর্বোচ্চ ১% এবং উপজেলা পর্যায়ে ১ দশমিক ৫%-এর মধ্যে সীমিত রাখতে হবে। ডেটা সেবায় ফোরজি সংযোগ সফলতার হার ৯৯% এবং জেলা পর্যায়ে ৯৮ দশমিক ৫% থাকতে হবে। গড় ব্যবহারকারী ডাউনলোড গতি নেটওয়ার্ক পর্যায়ে কমপক্ষে ৩ দশমিক ৫ এমবিপিএস এবং জেলা পর্যায়ে ২ দশমিক ৫ এমবিপিএস হতে হবে। ড্রাইভ টেস্টে ভয়েস সেবায় কল সেটআপ সাফল্যের হার ৯৮% বা তার বেশি, কলড্রপ (অটোমোড) ২%-এর মধ্যে এবং ভোল্টি (ভয়েস ওভার এলটিই প্রযুক্তি)-এর জন্য গড় ব্যবহারকারী মান সূচক ন্যূনতম ৩.৫ হতে হবে। ডেটা সেবায় ডাউনলোড স্পিড ‍সর্বনিম্ন ১০ এমবিপিএস এবং আপলোড ২ এমবিপিএস নির্ধারণ করা হয়েছে।

সেবার মান তদারকিতে মাসিক রিপোর্টিং

নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী অপারেটরদের এখন থেকে প্রতি মাসে তাদের নেটওয়ার্কের মান সংক্রান্ত মূল সূচক (কেপিআই) জমা দিতে হবে। এসব সূচক মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে—অ্যাক্সেসিবিলিটি, রিটেইনেবিলিটি ও নেটওয়ার্ক ইন্টিগ্রিটি।

অ্যাক্সেসিবিলিটি (নেটওয়ার্কে প্রবেশ ও কল সেটআপ)

এই সূচকগুলোর মাধ্যমে বোঝা যাবে গ্রাহকরা কতটা সফলভাবে নেটওয়ার্কে প্রবেশ করতে পারছেন এবং কল সেটআপ হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে কল সেটআপ সাকসেস রেট (টুজি ও ফোরজি-ভোল্টি), পেজিং সাকসেস রেট, আর ইআরএবি সেটআপ সাকসেস রেট। এ ছাড়া, যেখানে এই হার ৯০% বা ৭০%–এর নিচে নেমে আসে, সেইসব খারাপ সেলগুলো আলাদা করে চিহ্নিত করতে হবে।

রিটেইনেবিলিটি (সংযোগ ধরে রাখার সক্ষমতা)

এই সূচকগুলোতে দেখা হবে কল বা ডেটা সেশন শুরু হওয়ার পর তা কতটা স্থিতিশীল থাকে। এর মধ্যে রয়েছে কলড্রপ রেট (২জি ও ৪জি), ভোল্টি অস্বাভাবিক বিচ্ছিন্নতার হার, এলটিই নন-রিটেইনেবিলিটি, এসআরভিসিসি সাকসেস রেট এবং হ্যান্ডওভার সাকসেস রেট।

নেটওয়ার্ক ইন্টিগ্রিটি (নেটওয়ার্কের সার্বিক দক্ষতা-ক্ষমতা )

এখানে দেখা হবে নেটওয়ার্ক অবকাঠামো কতটা কার্যকরভাবে কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রতি বেস স্টেশনে এলটিই পিআরবি ব্যবহার হার, ব্যবহারকারীর আপলিঙ্ক থ্রুপুট (এমবিপিএস) এবং সিকিউআই/আরএসআরকিউ মান অনুযায়ী ‘খারাপ স্যাম্পল’-এর শতকরা হার।

বিটিআরসি বলছে, সব সূচকের ফলাফল মাসভিত্তিক গড় করে নেটওয়ার্ক, জেলা ও উপজেলা স্তরে আলাদা আলাদাভাবে জমা দিতে হবে। পাশাপাশি, সবচেয়ে খারাপ পারফর্ম করা ৫০টি সেলের আলাদা তালিকা জমা দিতে হবে, যেখানে অ্যাক্সেসিবিলিটি ও রিটেইনেবিলিটি সূচক দুর্বল। বিটিআরসি কর্মকর্তারা বলছেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে অপারেটরদের সেবার মান নিয়ে আরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। একই সঙ্গে দুর্বল এলাকাগুলো দ্রুত চিহ্নিত করে সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে। খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বাধ্যতামূলক মাসিক রিপোর্টিংয়ের ফলে অপারেটরদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হবে সেবার মান বজায় রাখতে, বিশেষ করে গ্রামীণ ও শহরতলির এলাকায় যেখানে এখনও দুর্বল নেটওয়ার্ক ও ঘনঘন কল ড্রপ নিয়ে অভিযোগ বেশি। সংশোধিত এই কোয়ালিটি অব সার্ভিস (কিউওএস) ফিক্সড ইন্টারনেট ও টেলিফোনি এবং এনটিটিএনদের জন্য করা হয়েছে। ফিক্সড ইন্টারনেট ও টেলিফোনিতে ফিক্সড টেলিফোন সেবায় কলড্রপ ১%-এর মধ্যে, কল সেটআপ সাফল্যের হার ৯৯%-এর বেশি এবংকল সংযোগ সময়)৬ সেকেন্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। এখানে ইন্টারনেট সেবায় লোকাল ট্র্যাফিকের সংযোগ সময় সর্বোচ্চ ২৫ এমএস, ডেটা হারানোর হার ১%-এর মধ্যে এবং নেটওয়ার্কের প্রাপ্যতা ৯৯% বা তার বেশি হতে হবে।

গ্রাহকের প্রান্তে ডাউনলোড-আপলোড স্পিড সাবস্ক্রাইব করা গতির অন্তত ৯৫% নিশ্চিত করতে হবে।এনটিটিএন অপারেটরদের ক্ষেত্রে ডেটা হারানো সর্বোচ্চ ০.০১%, ল্যাটেন্সি ৫ এমএস এবং সংযোগের জিটার ৩ এমএসের এর মধ্যে রাখতে হবে। ফাইবার নেটওয়ার্কে সেবার সমস্যা মেট্রো (মহানগর) এলাকায় ৪ ঘণ্টা এবং গ্রামীণ এলাকায় ৬ ঘণ্টার মধ্যে সমাধান করতে হবে। এই কিইওএস অনুযায়ী গ্রাহক অভিযোগ সমাধানে কঠোর মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে বিটিআরসি। নেটওয়ার্ক-সম্পর্কিত নয় এমন অভিযোগ ২৮ দিনের মধ্যে শতভাগ সমাধান করতে হবে। এছাড়া গ্রাহকসেবা সেন্টার-এ আসা ৯০% কল ৪০ সেকেন্ডের মধ্যে এবং সব কল ৯০ সেকেন্ডের মধ্যে রিসিভ করতে হবে।

** ফোরজি কাভারেজে ব্যর্থ অপারেটররা
** মোবাইল অপারেটরদের আয়ে শেয়ার দাবি বেবিচকের
** মোবাইল ইন্টারনেটের দাম না কমায় ক্ষোভ প্রকাশ
** ৫৯০৪ মোবাইল টাওয়ার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ
** মোবাইলের রোমিং বিল দেওয়া যাবে টাকায়
** মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কমেছে ১.৩২ কোটি
** বছরে ২০০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
** গ্রামীণফোনের মনোপলি ব্যবসা দমাতে আইনও ব্যর্থ!
** আজ ফ্রি ১ জিবি ইন্টারনেট পাবেন যেভাবে
** ‘সেবা আমদানির’ নামে রাজস্ব ফাঁকি ১৮২৫ কোটি টাকা
** পদ্মা সেতু নির্মাণে সারচার্জ বন্ধে আইনি নোটিশ
** একজনের নামে থাকতে পারবে সর্বোচ্চ ১০টি সিম
** জুলাই থেকে ২০% কমবে ইন্টারনেটের দাম: তৈয়্যব
** কোটি এসএমএসে হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হাওয়া
** দুই স্তরে দাম কমছে ইন্টারনেটের
** আইওএফ’র ৬০০ কোটি লুট তদন্তে আয়কর গোয়েন্দা
** ৬০০ কোটি টাকা লুটে সালমানের সংশ্লিষ্টতা
** টেলিকমেও সালমানের থাবা, লুটেছেন ৬২৫ কোটি
** ব্যান্ডউইথ দামের বৈষম্যে বিপাকে ‘আইএসপি’
** এক যুগেও ভ্যাটের ৪২ কোটি টাকা দেয়নি বাংলালিংক
** স্যামসাংয়ের দেড় কোটি ফোন রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এসেছে
** গ্রামীণফোন: ১৬ কোটি টাকার উপর করফাঁকি ৬.৪৩ কোটি টাকা
** এক অভিযোগ নিষ্পত্তিতে গ্রামীণফোনের ‘৯ মাস’ পার
** এলটিইউ’র ১১০ প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট সফটওয়্যার নিয়ে ‘তামাশা’
** ভ্যাটের ৫৮ কোটি টাকা দিতেই হবে বাংলালিংককে
** ‘তরঙ্গ চার্জে’ ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে বাংলালিংককে
** গ্রামীণফোন ‘অজুহাত’ দেখিয়ে ভ্যাট দেয়নি
** মূসক দিচ্ছে না বাংলালিংক, সাড়া দেয়নি তাগিদপত্রে
** অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের ভ্যাট দিচ্ছে না গ্রামীণফোন
** গ্রামীণফোনের ৭ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি
** ভিওনের এনটিটিএন আবেদন, নমনীয় বিটিআরসি
** গ্রামীণ টেলিকম লাইসেন্স পেলো ডিজিটাল ওয়ালেটের
** ‘গুগল পে’ চালু হচ্ছে বাংলাদেশে
** ‘৫জি’ সেবার নামে লুটপাটই ছিল মূল লক্ষ্য

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!