প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে দ্রুত নিয়োগের নির্দেশ

দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ দ্রুত পূরণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পাশাপাশি তিনি এই পদে পদায়ন ও নতুন নিয়োগেরও নির্দেশ দেন। সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এক বৈঠকে এই নির্দেশনা দেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি নির্দেশনা দিয়ে বলেন, নিয়োগপ্রক্রিয়ায় কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করে দেখতে হবে—যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতা করছেন এবং অভিজ্ঞ, তাঁদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। একই সঙ্গে তরুণ ও যোগ্য ব্যক্তিদেরও প্রধান শিক্ষক হওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। এই পুরো প্রক্রিয়া যেন স্বচ্ছ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়, সে বিষয়েও জোর দেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষক বদলির নীতিমালায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অনেক সময় শিক্ষকরা এক উপজেলায় নিয়োগ পেয়েও পরবর্তীতে অন্য উপজেলা বা শহরের কাছাকাছি স্কুলে বদলির জন্য চেষ্টা করেন। এ জন্য তারা বিভিন্ন জায়গায় সুপারিশ ও তদবির করেন। এ ধরনের অনিয়ম রোধে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা ও নির্ধারিত প্রক্রিয়া থাকা জরুরি, যাতে কেবল সেই প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই বদলি সম্ভব হয়। তিনি আরও জানতে চান, স্কুলগুলোতে মেয়েদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে কি না এবং অবকাঠামো নারীবান্ধব কিনা। ভবিষ্যতে স্কুলের ভবন নির্মাণের সময় পরিকল্পনা কমিটিতে অন্তত একজন নারী স্থপতিকে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেন তিনি, যাতে নারীবান্ধব অবকাঠামো নিশ্চিত করা যায়। পরিকল্পনা, চিন্তা ও বাস্তবায়নের প্রতিটি ধাপে নারীদের প্রয়োজন ও নিরাপত্তাকে আলাদা গুরুত্ব দিয়ে সব ব্যবস্থা রাখতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পর্যায়ক্রমে ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান ও মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ স্থাপনের ওপর গুরুত্ব দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে তিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার মান সম্পর্কে জানতে চান এবং কোন কোন বিদ্যালয় ভালো করছে, সে বিষয়ে মূল্যায়ন চেয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।

বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার অবকাঠামো উন্নয়নে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হলেও শিক্ষার মান তেমনভাবে উন্নত হয়নি। তিনি জানান, বিদ্যালয়গুলোর কার্যকারিতা মূল্যায়ন করে র‍্যাঙ্কিং করা হচ্ছে এবং যেসব স্কুলের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে আছে, সেগুলোর জন্য বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, মূল্যায়নে দেখা গেছে, যেসব বিদ্যালয়ের শিক্ষা মান ভালো, সেখানে প্রধান শিক্ষকের যোগ্যতা এবং তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ও আচরণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!