পোলট্রি সিন্ডিকেটের কারসাজি, দৈনিক লুট ৯ কোটি

ঈদকে সামনে রেখে অতিরিক্ত দামে মুরগির বাচ্চা বিক্রির মাধ্যমে পোলট্রি খাতের একটি সিন্ডিকেট প্রতিদিন ৯ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের সভাপতি সুমন হাওলাদার এ অভিযোগ তুলে ধরেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পোলট্রি শিল্প দেশের অন্যতম প্রধান খাদ্য সরবরাহকারী খাত হলেও এটি বর্তমানে একটি করপোরেট সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। এই সিন্ডিকেট পোলট্রি বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য কায়েম করতে চাইছে, যা ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারিদের জন্য ভয়াবহ সংকট তৈরি করেছে। এর ফলে তাঁদের ব্যবসা ও মুনাফা কমে যাচ্ছে এবং তাঁরা অস্তিত্ব সংকটে পড়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের সভাপতি সুমন হাওলাদার অভিযোগ করেন, ব্রিডার কোম্পানি ও ফিড ইন্ডাস্ট্রিই এই করপোরেট সিন্ডিকেটের মূল কারিগর। তাঁর দাবি, ব্রিডার কোম্পানিগুলো কৃত্রিমভাবে মুরগির বাচ্চার দাম বাড়াচ্ছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর (ডিএলএস) ব্রয়লার বাচ্চার মূল্য ৪৯ টাকা নির্ধারণ করলেও কোম্পানিগুলো তা ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি করছে। একইভাবে, নির্ধারিত ৫৭ টাকার লেয়ার বাচ্চা বাজারে ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা খামারিদের জন্য অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় খামারিরা লাভ করতে পারছেন না। তিনি আরও অভিযোগ করেন, চাহিদা বাড়ানোর অজুহাতে এই সিন্ডিকেট ইচ্ছাকৃতভাবে সরবরাহ কমিয়ে দেয়, যাতে দাম আরও বাড়ানো সম্ভব হয়। এভাবে প্রতিদিন মুরগির বাচ্চা বিক্রি করে তারা প্রায় ৯ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঈদ ও অন্য বড় উৎসবগুলো সামনে রেখে এই সিন্ডিকেট মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে দেয়; যা খামারিদের জন্য চাপ হয়ে যায়। যেকোনো বড় উৎসবের সময় খামারিরা বেশি লাভের আশা করেন, কিন্তু সিন্ডিকেট নিজেদের বাড়তি মুনাফার জন্য দাম বাড়িয়ে খামারিদের পকেটে হাত দেয়।

সুমন হাওলাদার আরও অভিযোগ করেন, ফিড ইন্ডাস্ট্রির সিন্ডিকেট পরিকল্পিতভাবে খামারিদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। বিশ্ববাজারে ফিডের দাম কমলেও দেশীয় বাজারে তা কমানো হচ্ছে না। ২০২২ সালে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অজুহাতে ফিডের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো হয়, যার ফলে খামারিদের অতিরিক্ত খরচ বহন করতে বাধ্য করা হয়েছে। সে সময় প্রতি বস্তা ফিডের দাম ২,৫০০ টাকা থেকে বেড়ে ৩,৬০০ টাকায় পৌঁছে যায়। যেহেতু ডিম ও মুরগি উৎপাদনে মোট ব্যয়ের ৭০-৭৫ শতাংশ ফিডের পেছনে ব্যয় হয়, তাই এর দাম বৃদ্ধির ফলে খামারিরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!