পুতুলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ, তথ্য দিতে বাধা

শেখ হাসিনার পতন পরবর্তী সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) নিয়মিতভাবে বিভিন্ন দুর্নীতিবাজ সাবেক এমপি, মন্ত্রী, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর অংশ হিসেবে দুদকের আবেদন অনুযায়ী প্রায় প্রতিদিনই এসব দুর্নীতিবাজদের সম্পদ জব্দ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধের আদেশ দিচ্ছে আদালত। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) আদালত ক্ষমতাচ্যুত হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের প্রতিষ্ঠিত সূচনা ফাউন্ডেশনের ১৪টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন। গত বছরের ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত এসব অ্যাকাউন্টে জমা ছিল ৪৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিব প্রকাশ্য আদালতে এ সম্পদ জব্দের আদেশ দেন। আদেশের পর সংবাদ প্রকাশের জন্য বিস্তারিত তথ্য জানতে কিছু সাংবাদিক দুদকের সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখায় যান। সেখানে সংস্থাটির আদালত পরিদর্শক আমির হোসেনের কাছে তথ্য চাওয়ার পর তিনি বিষয়টি গোপন করেন। তিনি জানান, আমাদের কাছে তথ্য থাকলেও তা দিতে পারব না। সম্প্রতি ট্রেনিং শেষে এসেছি, যেখানে সাংবাদিকদের তথ্য না দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আপনাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলুন। তবে পরবর্তীতে পুতুলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধের তথ্য ফাঁস হয়ে যায়।

বিগত স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর দেখা গেছে, আদালতে দুদকের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তারা আওয়ামী দুর্নীতিবাজদের সম্পর্কিত কোনো তথ্য প্রকাশ করতে চান না। এর ফলে দেশের জনগণ বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সফল পদক্ষেপের বিষয়ে অবহিত হতে পারছে না। এ পরিস্থিতিতে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, কি সরকার তার সাফল্য গোপন করতে চাচ্ছে এবং এজন্যই কি দুদক জিআর শাখার কর্মকর্তারা তথ্য লুকাচ্ছেন?

অন্যদিকে, দেখা গেছে, বিগত সরকারের আমলে যখন বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা দায়ের বা চার্জশিট দাখিল করত, তখন সেই তথ্য স্বাভাবিকভাবেই সব সাংবাদিকদের সরবরাহ করা হতো। তবে বর্তমানে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি, মন্ত্রী এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা, সম্পদ জব্দ, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি তথ্য দিতে কিছুটা আপত্তি জানানো হচ্ছে। এ বিষয়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতির এডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম মন্তব্য করেন, দুদকের জিআর শাখার উচিত সাংবাদিকদের তথ্য সরবরাহ করা, যাতে দেশবাসী এসব দুর্নীতিবাজদের সম্পত্তির তথ্য জানতে পারে।

দুদকের আদালত পরিদর্শক আমির হোসেনের এমন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম ও কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তারা কেউই ফোনকল রিসিভ করেননি।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!