পাল্টা শুল্ক: ২৫ বোয়িং বিমান কিনবে বাংলাদেশ

পাল্টা শুল্ক ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর-কষাকষির অংশ হিসেবে বোয়িংয়ের কাছ থেকে ২৫টি বিমান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। এর কিছু আগামী এক-দুই বছরের মধ্যেই দেশে আসবে। রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য দেন বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান। তিনি আরও জানান, পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে বাংলাদেশ থেকে একটি প্রতিনিধি দল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠক হবে পরশু। বিমান কেনার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির একটি চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান বাণিজ্যসচিব।

সাংবাদিকদের বাণিজ্যসচিব জানান, শুল্ক চুক্তির খসড়া পাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফা কাজ হয়েছে। এর মধ্যে ওয়াশিংটনে দুই দফা সরাসরি বৈঠক ও অনলাইন আলোচনাও অন্তর্ভুক্ত। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা শেষে ২৩ জুলাই বাংলাদেশ নিজেদের চূড়ান্ত অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রকে জানায়। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নতুন করে সময় চাওয়া হয়।

মাহবুবুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সময় চাওয়ার প্রেক্ষিতে তাদের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) অফিস আগামী ২৯ ও ৩০ জুলাই সরাসরি বৈঠকের জন্য সময় দিয়েছে। ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বাণিজ্য উপদেষ্টা, নিরাপত্তা উপদেষ্টা, বাণিজ্যসচিব উপস্থিত থাকবেন। তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ৩১ জুলাই সেখানে আরেকটি সভা হতে পারে। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল আগামীকাল সন্ধ্যায় রওনা দেবে। যেহেতু তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে, ফলে আগামী ১ আগস্টের যে সময়সীমা আছে, তার মধ্যেই হয়তো শুল্কের বিষয়ে ফলাফল ঘোষণা হয়ে যাবে বলে আমাদের ধারণা।’

বোয়িং থেকে বিমান কেনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বোয়িং একটি বেসরকারি কোম্পানি, এটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ব্যবসা নয়। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত মোট ২৫টি বোয়িং বিমানের অর্ডার দিয়েছে। এর বাইরে ভারত ও ভিয়েতনাম ১০০টি করে এবং ইন্দোনেশিয়া ৫০টি বিমান অর্ডার করেছে।’ তিনি বলেন, ‘বোয়িং কোম্পানি তাদের উৎপাদন সক্ষমতা অনুযায়ী সরবরাহ করবে। যারা আগে অর্ডার দিয়েছে, তারা অগ্রাধিকার পাবে অথবা কোম্পানি তাদের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা অনুযায়ী সরবরাহ করবে। তবে বাংলাদেশের জরুরি ভিত্তিতে কিছু বিমান প্রয়োজন, তাই আশা করছি আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে কয়েকটি বোয়িং পাওয়া যাবে।’

বাংলাদেশ বিমানের বহর বাড়ানো সরকারের আগের থেকেই পরিকল্পনায় ছিল—জানিয়ে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, আগে যেখানে ১৪টি বোয়িংয়ের অর্ডার ছিল, পাল্টা শুল্ক ইস্যুকে কেন্দ্র করে সেটি বাড়িয়ে ২৫টি করা হয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানির একটি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৯ মিলিয়ন টন গম আমদানি হয়। এছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে সয়াবিন ও তুলা আমদানির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে; সয়াবিন আমদানির বিষয়ে আলোচনা শুরু হচ্ছে এবং তুলা আমদানির বিষয়ে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। মাহবুবুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সব দেশের সঙ্গে মোট বাণিজ্য ঘাটতি ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলার, যা কমাতেই তারা পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে।

**বোয়িং কেনার মাধ্যমে শুল্ক কমানোর চেষ্টা
**‘বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক কমাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র’
**বাংলাদেশি পণ্যে ৩৫% শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের
**‘শুল্কের ব্যাপারে ওয়ান টু ওয়ান নেগোসিয়েশন হবে’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!