পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সারাফত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহিদ এবং ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সারাফাতের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন (গালিব) এই আদেশ দেন। দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আবেদনে বলা হয়, চৌধুরী নাফিজ সারাফত ও অন্যদের বিরুদ্ধে ঘুস, দুর্নীতি, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা ও নিজেদের মাধ্যমে একে অপরের যোগসাজশে প্রায় ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাতসহ বিভিন্ন অভিযোগের ওপর অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অনুসন্ধান টিম কাজ করছে।
অভিযোগের অনুসন্ধানকালে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, চৌধুরী নাফিজ সারাফত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহিদ এবং পুত্র রাহিব সাফওয়ান চৌধুরী তাদের নিজ নামে এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ টাকা জমা ও উত্তোলন করেছেন, যা তাদের পেশা, অর্থের উৎস ও হিসাব খোলার উদ্দেশ্যের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এই অর্থ তাদের জ্ঞাত আয়ের সাথে মেলে না এবং প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এই বিপুল পরিমাণ ব্যাংক লেনদেন মানিলন্ডারিংয়ের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান শুরুর পর থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্টরা তাদের ব্যাংক হিসাবে থাকা অর্থ অন্যত্র স্থানান্তর বা বেহাত করার বিভিন্ন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। সঠিক অনুসন্ধানের স্বার্থে, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, তার পরিবারের সদস্যদের এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবগুলো অবিলম্বে অবরুদ্ধ করা জরুরি। তাই, বিএফআইইউ এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে এসব হিসাব অবরুদ্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়ার জন্য আদেশ প্রয়োজন।
এর আগে, ৭ জানুয়ারি, একই আদালত নাফিজ সারাফত, আঞ্জুমান আরা শহিদ এবং রাহিব সাফওয়ান সারাফাতের রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে থাকা ১৮টি ফ্ল্যাট জব্দের নির্দেশ দেন। এসব ফ্ল্যাট ছাড়াও, নাফিজ সারাফত ও আঞ্জুমান আরা শহিদের নামে থাকা জমি, বাড়ি ও প্লটও ক্রোক করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে, ২২ জানুয়ারি, আদালত নাফিজ সারাফাতের দুবাইয়ে থাকা একটি ফ্ল্যাট এবং একটি ভিলা জব্দ করার আদেশ দেন।