নতুন ১০ কর অঞ্চলে তিনমাস ‘বেতন নেই’

নতুন ১০ কর অঞ্চল। কর সংক্রান্ত সব কাজ হচ্ছে। রাজস্ব আদায়ের সব কার্যক্রম চলছে। কিন্তু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন পাচ্ছেন না। এই ১০ কর অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী অন্তত তিনমাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। তাদের দাবি, একবার কোড সমস্যা। এখন বলছে, বরাদ্দের সমস্যা। অনেক অফিসে দৈনন্দিন ব্যয় চালানোর টাকাও নেই। কাগজ-কলম কেনার অর্থ সংকটেও ভুগতে হচ্ছে। ঈদের আগেও বেতন-বোনাস মিলবে কি না-তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাদের। বেতন না পাওয়ায় তাদের কষ্টে দিন কাটছেন। আর এনবিআর বলছে, বরাদ্দ না থাকায় বেতন দেওয়া যাচ্ছে না। তবে সহসাই এই সমস্যা কেটে যাবে।

এনবিআর সূত্রমতে, ২০১৯ সাল থেকে আয়কর বিভাগের সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়। ২০২২ সালে আয়কর প্রশাসন সম্প্রসারণের যৌক্তিকতা তুলে ধরে এনবিআর থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়। তবে ১১ বছর ধরে নতুন কর অঞ্চলের সম্প্রসারণ হয়নি। করজাল বাড়াতে ২৩ সালের ১৪ নভেম্বর সরকার ২৮টি কর অঞ্চল, চারটি বিশেষায়িত ইউনিট ও চারটি আপিল অঞ্চলের অনুমোদন দেয়। আধুনিক, যুগোপযোগী, তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর এবং আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা অনুযায়ী আয়কর প্রশাসনকে সাজানোর উদ্যোগের অংশ হিসেবে নতুন কর অঞ্চল স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়। যাতে মোট জনবলের সংখ্যা চার হাজার ৬০০ জন।

এনবিআর সূত্রমতে, ২০২৪ সালের ১৮ জানুয়ারি নতুন এই ১০টি কর অঞ্চল ও তিনটি বিশেষায়িত জোনে কমিশনার নিয়োগের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু হয়। এর মধ্যে রয়েছে-কর অঞ্চল-১৬, ঢাকা; কর অঞ্চল-১৭, ঢাকা; কর অঞ্চল-১৮, ঢাকা; কর অঞ্চল-১৯, ঢাকা; কর অঞ্চল-২০, ঢাকা; কর অঞ্চল-২১, ঢাকা; কর অঞ্চল-২২, ঢাকা; কর অঞ্চল-২৩, ঢাকা; কর অঞ্চল-২৪, ঢাকা; কর অঞ্চল-২৫, ঢাকা। এছাড়া তিনটি বিশেষায়িত জোন বা দপ্তর হলো-ই-ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট ইউনিট, আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট এবং উৎসে কর ব্যবস্থাপনা ইউনিট।

কয়েকটি নতুন কর অঞ্চলের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানিয়েছেন, সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পেয়েছেন তারা। এরপর মার্চ, এপ্রিল ও মে-এই তিন মাসের বেতন বন্ধ রয়েছে। বরাদ্দ না থাকায় বেতন-ভাতা বিল দাখিল করাও সম্ভব হচ্ছে না। সামনে কোরবানির ঈদ হওয়ায় এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর দুশ্চিন্তার মাত্রা বেড়েছে। এনবিআরকে প্রায় সব কর অঞ্চল থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বোর্ড থেকে বলা হয়েছে, বরাদ্দ নেই। বরাদ্দ পেলে দ্রুত দেওয়া হবে।

এই বিষয়ে এনবিআরের আয়কর বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিষয়টি খুবই মানবিক। বেতন-ভাতা না পাওয়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কষ্টে রয়েছেন। এনবিআর বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করা হয়েছে।

আয়কর বিভাগ সূত্রমতে, প্রথম পর্যায়ে ১৩টি (১০টি কর অঞ্চল ও তিনটি বিশেষায়িত ইউনিট)। ঢাকায় কর অঞ্চল-১৬ থেকে কর অঞ্চল-২৫ পর্যন্ত; আয়কর গোয়েন্দা; ই-ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট ও উৎসে কর ব্যবস্থাপনা ইউনিট স্থাপন যাত্রা শুরু করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৯টি কর অঞ্চল (কক্সবাজার, যশোর, কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, দিনাজপুর, ফরিদপুর, নরসিংদী, কর অঞ্চল-৫ ও ৬ চট্টগ্রাম)। তৃতীয় পর্যায়ে চারটি আপিল (দুটি ঢাকায়, একটি চট্টগ্রামে, একটি রংপুরে) কর অঞ্চল পাবনা এবং বিশেষায়িত আন্তর্জাতিক কর ইউনিট স্থাপিত হবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!