দেশে দৈনিক ১০ থেকে ২০ কোটি টাকার প্রতারণামূলক লেনদেন হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আবু লাইচ মো. ইলিয়াচ জিকু। তিনি বলেন, এসব লেনদেনের কারণে সাধারণ মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সন্দেহজনক লেনদেন ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে ফোন কলের মাধ্যমে বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোর জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি মিলনায়তনে আয়োজিত ‘সবার জন্য ডিজিটাল ব্যাংকিং: আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে সেতুবন্ধন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।
ইলিয়াচ বলেন, এখন ডিজিটাল লেনদেনকে কেন্দ্র করে একটি চক্র অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এজন্য বিকাশসহ সব মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিতভাবে গ্রাহকের তথ্য হালনাগাদ করতে বলা হয়েছে। তিন থেকে ছয় মাস অন্তর তথ্য হালনাগাদ করলে প্রতারণা অনেকাংশে কমে আসবে। কারণ দেখা যায়, কারও নামে বিকাশ হিসাব খুলে প্রতারণা হচ্ছে, অথচ প্রকৃত গ্রাহক একজন অজ্ঞাতপরিচয় বৃদ্ধা।
পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, ব্যাংক হিসাব খোলার সময়ও ভুয়া তথ্য ব্যবহার করা হয়। কখনো কখনো শাখা ব্যবস্থাপক জড়িত না হলে তথ্যগত ঘাটতি থাকার পরও প্রতারকের নামে হিসাব খোলা সম্ভব নয়। দেখা যায়, কোনো গ্রাহকের এক বছরে লেনদেন নেই, হঠাৎ কয়েক দিনে কয়েক লাখ টাকার লেনদেন হচ্ছে এবং ৩০ মিনিট পরপরই টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে। অথচ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ফোনে যোগাযোগ করলে এ ধরনের প্রতারণা সহজেই ঠেকানো যেত।
একটি ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, হঠাৎ এক গ্রাহকের হিসাবে বিপুল অর্থ জমা হয়। ওই ব্যক্তি তাৎক্ষণিকভাবে সেই টাকা তুলে ফেলেন। পরে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ওই ব্যক্তি প্রতারক এবং ব্যাংকে প্রবেশ করেছেন এক চোখ অন্ধ সেজে এবং হাত ব্যান্ডেজ করে। এভাবেও প্রতারণা হচ্ছে, যা কর্তৃপক্ষের নজরে আনা জরুরি। তিনি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিটি সন্দেহজনক লেনদেনের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোর আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ। প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. এজাজুল ইসলাম এবং রবি আজিয়াটা পিএলসির কমার্শিয়াল পার্টনারশিপস প্রধান।