কিছুদিনের মধ্যে বাংলাদেশকে ১,৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে আদানি পাওয়ার। তিন মাসের মধ্যে পুরো সরবরাহ পাওয়ার পরও আদানি বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দাম ও কর–সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে রাজি হয়নি।
বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে বিলম্বের কারণে ৩১ আগস্ট আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক কমিয়ে দেয়। ১ নভেম্বর ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেয়। শীত মৌসুমে চাহিদা কমে যাওয়ার পর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক কমানোর অনুরোধ করলে আদানি তা মেনে নেয়, তবে মূল্য পরিশোধের বিষয়টি অপরিবর্তিত থাকে।
বার্তা সংস্থাটি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে,বিপিডিবির অনুরোধে, আগামী সপ্তাহ থেকে গ্রীষ্ম মৌসুমের আগে আদানি পাওয়ার বাংলাদেশকে পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহে রাজি হয়েছে। আদানি পাওয়ারের ঝাড়খন্ডে অবস্থিত কেন্দ্র থেকে শুধুমাত্র বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। সূত্র দুটি আরও বলেছে, বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে রাজি হলেও আদানি পাওয়ার বাংলাদেশের অন্যান্য অনুরোধ মানতে রাজি হয়নি, অর্থাৎ মূল্য ও করছাড় দিতে রাজি হয়নি। গত মঙ্গলবার আদানি পাওয়ারের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করে বিপিডিবি।
আদানি পাওয়ার সম্পর্কে একটি সূত্র রয়টার্সকে জানায়, ‘আদানি পাওয়ার ছাড় দিতে রাজি নয়, এমনকি ১০ লাখ ডলারও নয়। বাংলাদেশ কেনো ছাড় পায়নি; আমরা পারস্পরিক বোঝাপড়া চাই;কিন্তু এ বিষয়ে তারা চুক্তির শর্ত টেনে আনছে।’এ বিষয়ে মন্তব্য চাইলেও বিপিডিবির চেয়ারপারসন মো. রেজাউল করিম রয়টার্সের আহ্বানে সাড়া দেননি। এর আগে রয়টার্সকে তিনি বলেছিলেন, ‘আদানির সঙ্গে এখন আমাদের বড় কোনো সমস্যা নেই এবং তারা পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে যাচ্ছে।’তিনি আরও বলেছিলেন, আদানি পাওয়ারের পাওনা পরিশোধের পরিমাণ মাসে সাড়ে আট কোটি ডলার থেকে বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে।
আদানি পাওয়ারের মুখপাত্রও রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। এর আগে রয়টার্সের অন্য আরেকটি সংবাদ প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিবৃতিতে তারা জানায়, ক্রেতার চাহিদার সাপেক্ষে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়; ক্রেতাদের চাহিদা সময় সময় পাল্টায়।
গত ডিসেম্বর মাসে আদানি পাওয়ারের মুখপাত্র বলেছিলেন, বিপিডিবির কাছে তাঁদের পাওনা প্রায় ৯০ কোটি ডলার; যদিও মো. রেজাউল করিম তখন বলেছিলেন, এই অঙ্ক ৬৫ কোটি ডলার। মতভিন্নতা মূল কারণ হলো বিদ্যুতের শুল্ক হিসাবের পদ্ধতি।এর আগে বিপিডিবি আদানি পাওয়ারের কাছে কয়েক লাখ ডলারের কর–সুবিধা এবং গত বছরের মে মাস পর্যন্ত যে ছাড় ছিল, তা পুনর্বহাল চেয়ে চিঠি দিয়েছিল।