‘দেশের শ্রমিকের ১৫ % শ্রমিক ফরমাল সেক্টরের’

বাংলাদেশে মোট শ্রমিকের সংখ্যা ৭৫ মিলিয়ন, যার মধ্যে ১৫ শতাংশ ফরমাল এবং বাকিরা ইনফরমাল সেক্টরে কর্মরত। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় মার্কিন শ্রম মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার কেইথ সাউন্ডারলিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরেন নৌপরিবহন ও শ্রম ও কর্মসংস্থানবিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। বুধবার (১১ জুন) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

বৈঠকে শ্রম ও কর্মসংস্থানবিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, বাংলাদেশে ৭৫ মিলিয়ন শ্রমিক রয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৫ শতাংশ ফরমাল সেক্টরে এবং বাকিরা ইনফরমাল সেক্টরে কর্মরত। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সব শ্রমিকের জন্য ন্যায্য মজুরি, শোভন কর্মপরিবেশ, কর্মস্থলে ক্ষতিপূরণ এবং মাতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করতে কাজ করছে। বৈঠকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শ্রমখাতে সহযোগিতা বাড়ানো, শ্রমিক অধিকারের সুরক্ষা, নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং দক্ষতা উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। বিশেষভাবে তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি ও কর্মপরিবেশ উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগ নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

বৈঠকে শ্রম উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত শ্রম সংস্কার কার্যক্রমের বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, শ্রম আইন দ্রুত সময়ের মধ্যে সংশোধন করা হবে, ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করা এবং শ্রম পরিদর্শন ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপদেষ্টা বলেন, সরকার শ্রমিকদের কল্যাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধভাবে কাজ করছে। তিনি জানান, বড় কনস্ট্রাকশন কোম্পানিগুলো যদি বিধি অনুযায়ী তাদের মুনাফার একটি অংশ কেন্দ্রীয় তহবিলে জমা না দেয়, তাহলে তারা সরকারি ক্রয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে না। এছাড়া তৈরি পোশাক, শিপ ব্রেকিং ও নির্মাণসহ সব শিল্প খাতে নিরাপদ, টেকসই ও ন্যায়ভিত্তিক কর্মপরিবেশ গড়ে তুলতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

উপদেষ্টা আরও জানান, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশই তরুণ, যা কর্মসংস্থানের জন্য একটি বড় সম্ভাবনা তৈরি করেছে। বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এই তরুণদের জন্য নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে অনলাইনভিত্তিক কাজ ও ফ্রিল্যান্সিংয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে ভারতের পরেই দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে সরকার এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা যৌথভাবে নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। বৈঠক শেষে উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শ্রম খাতে সহযোগিতা আরও জোরদার হবে এবং এর ফলে বাংলাদেশের শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নয়নে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)-এর চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান (এনডিসি, পিএসসি) এবং জাতিসংঘের জেনেভাস্থ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!