বাংলাদেশ দুর্নীতির ধারণা সূচকে দুই ধাপ পিছিয়ে ১৫১তম অবস্থানে পৌঁছেছে, যেখানে গত বছর ছিল ১৪৯তম। সর্বনিম্ন স্কোর পাওয়া দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ১৪তম স্থানে রয়েছে। এ র্যাঙ্কিং ১৮০টি দেশ নিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) পরিচালিত ‘দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই) ২০২৪’-এর বৈশ্বিক প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের সূচকে দুর্নীতির ধারণার মাত্রাকে ০ থেকে ১০০-এর স্কেলে নির্ধারণ করা হয়। ‘০’ স্কোরকে দুর্নীতির কারণে সর্বোচ্চ ক্ষতিগ্রস্ত এবং ‘১০০’ স্কোরকে দুর্নীতির কারণে সবচেয়ে কম ক্ষতিগ্রস্ত বা সর্বাধিক সুশাসিত বলে ধারণা করা হয়।টিআই বলেছে, ১০০ স্কোরের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৩, যা গতবারের চেয়ে ১ পয়েন্ট কম। গত বছর বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২৪।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, ২০১২ সালের পর এবার দুর্নীতি সূচকে বাংলাদেশ সবচেয়ে কম স্কোর পেয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভুটান ছাড়া সবার স্কোর কমেছে। টিআইবির বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দুর্নীতির ব্যাপকতা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। বিগত ১৩ বছরে সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে বক্তব্য দিলেও বাস্তবে তা প্রশ্রয় ও সহায়তা করেছে। ফলে লুটপাট, দুর্নীতিবাজদের তোষণ, আইনের দুর্বল প্রয়োগ এবং কাঠামোগত দুর্বলতার কারণে বাংলাদেশের অবস্থান ক্রমাগত অবনতি হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় এবারও বাংলাদেশের অবস্থান আফগানিস্তানের পর দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। সিপিআই এ সর্বোচ্চ স্কোর পেয়েছে ডেনমার্ক। সর্বনিম্ন স্কোর পেয়েছে সাউথ সুদান।
সিপিআই সূচকের বিশ্লেষণ বলছে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের স্কোর গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। অর্থাৎ স্কোর বিবেচনায় বাংলাদেশের নিম্নমুখী যাত্রা সুস্পষ্ট। ২০১২ সালে থেকে সূচকে ব্যবহৃত ১০০ ছেলে বাংলাদেশের স্কোর ২০২২ সাল পর্যন্ত ‘২৫ থেকে ২৮’-এর মধ্যে আবর্তিত হয়েছে। ২০২৩ সালে স্কোর এক পয়েন্ট অবনমন হয়ে ২৪ এবং ২০২৪-এ আরও এক পয়েন্ট অবনমন হয়ে ২৩ হয়েছে।
২০১২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দুর্নীতির ধারণা সূচকে (সিপিআই) বাংলাদেশের গড় স্কোর ছিল ২৬, তবে এবার তা প্রায় তিন পয়েন্ট কমে সর্বনিম্ন হয়েছে। এই সময়ে ছয়বার স্কোর ছিল ২৬, তিনবার ২৫, আর একবার করে ২৪, ২৭ ও ২৮। নিম্নক্রম অনুযায়ী, বাংলাদেশ চারবার ১৩তম, তিনবার ১৪তম, দুইবার ১২তম এবং একবার করে ১৫, ১৬ ও ১৭তম অবস্থানে ছিল।