পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একমি পেস্টিসাইডস লিমিটেডের প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুতে অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর তদন্ত প্রতিবেদন দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে এই সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছেন একজন ব্যক্তি ও তিন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। তাঁরা জানিয়েছেন, দুদকে প্রতিবেদন পাঠানোর আগে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করার সুযোগ দিতে হবে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের বরাবর একটি চিঠি পাঠানো হয়, যেখানে এনফোর্সমেন্ট বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মাহমুদা শিরীনের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। চিঠিটি প্রেরণ করেন আফজালুর রহমান, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বেঙ্গল অ্যাসেট হোল্ডিংস লিমিটেড, চট্টগ্রাম প্লাস্টিক অ্যান্ড ফিশারিজ লিমিটেড, হেরিটেজ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড এবং ব্যক্তি বিনিয়োগকারী রুহুল আজাদের পক্ষে।
জানা গেছে, বিএসইসির ৯৭৩তম কমিশন সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ওই চার বিনিয়োগকারী ছাড়াও কোম্পানির আরও ছয়জন কর্মকর্তা এবং ছাগল-কাণ্ডের মতিউর রহমানসহ মোট ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দুদকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, এই ব্যক্তিদের নামে এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নামে কোনো টাকা জমা না দিয়েই প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যু করা হয়েছিল। তবে ওই চার বিনিয়োগকারীর দাবি, তারা কোম্পানির শেয়ার কিনেছেন নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে। বিষয়টি ব্যাখ্যা না নিয়েই বিএসইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, একতরফাভাবে বিষয়টির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই তাঁদের অবস্থান ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ প্রয়োজন। বিএসইসি বিষয়টি পরিষ্কার করার জন্য তাঁদের কাছে ব্যাখ্যা তলবও করতে পারে। একই সঙ্গে বিষয়টি দুদকের কাছে পাঠানোর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ৯৭৩তম কমিশন সভার প্রেস বিজ্ঞপ্তি এবং বিএসইসির তদন্ত প্রতিবেদনের একটি কপি চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে চিঠিতে।
এ বিষয়ে ওই তিন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বেঙ্গল অ্যাসেটস হোল্ডিংসের নামে ১১ লাখ ৩৪ হাজার ১৪০টি শেয়ার, চট্টগ্রাম পেস্টিসাইডস অ্যান্ড ফিশারিজের নামে ৬০ লাখ ৩০ হাজার ৫৮১টি শেয়ার, হেরিটেজ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের নামে ৪১ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৮টি শেয়ার এবং রুহুল আজাদের নামে ৫০ হাজার শেয়ার ইস্যু করেছে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি। চার বিনিয়োগকারীর নামে মোট ইস্যু হওয়া শেয়ারসংখ্যা ১ কোটি ১৩ লাখ ৯৪ হাজার ৩২৯টি (বোনাস শেয়ারসহ)। এর মধ্যে রুহুল আজাদের শেয়ার বেঙ্গল অ্যাসেট হোল্ডিংস থেকে কেনা হয়েছে, ফলে তার টাকা সরাসরি কোম্পানি সংশ্লিষ্টরা পাননি। অন্য তিন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে নগদ ও ব্যাংক লেনদেনের মাধ্যমে ১৪ কোটি টাকা নিয়েছেন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান অর্থ কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে একমি পেস্টিসাইডের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন বিষয়ে কমিশন তদন্ত করেছে। আমরা এসব বিষয়ে কমিশনের কাছে ব্যাখ্যা দিয়েছি। তবে টাকা ছাড়া প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুর বিষয়টি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করছি, বিষয়টি শিগগিরই সমাধান হয়ে যাবে।’
বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, ‘আমাদের তদন্তকারী দল একমি পেস্টিসাইডের বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে টাকা ছাড়া প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুর প্রমাণ পেয়েছে। আবার কেউ কেউ ভুয়া ব্যাংক ডকুমেন্টস দিয়েছে। কেউ কেউ আংশিক টাকা পরিশোধ করেছে। আবার কেউ কেউ কোনো টাকা না দিয়েই শেয়ার বরাদ্দ নিয়েছেন। এসব বিষয়ে আমরা দুদককে তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছি। তবে যাঁরা টাকা পরিশোধ করেছেন, তাঁদের রিভিউ করার সুযোগ রয়েছে।’
** যমুনা-পূবালী ব্যাংকের ১৩০০ কোটির বন্ড অনুমোদন
** সোনালী পেপারে জেনেক্সের কারসাজি, ১২ কোটি জরিমানা
** সোনালীতে কারসাজি, সাকিবকে ২ কোটি জরিমানা
** ফরচুন সুজের কারসাজি, শাস্তির মুখে হিরুরা
** শেয়ার কারসাজিতে ১০ কোটি ১৩ লাখ টাকা জরিমানা
** পুঁজিবাজার তদন্তে ৬ প্রতিবেদন জমা বিএসইসির
** শেয়ার কেলেঙ্কারিতে বিএসইসির কমিশনার
** বিএসইসিতে দুর্নীতি: দুদকের অভিযানে প্রমাণ মিলেছে
** বিএসইসির নেতৃত্বে আস্থাহীন বিনিয়োগকারীরা
** ছয় ব্যক্তি এক প্রতিষ্ঠানকে ৪৪ কোটি টাকা জরিমানা
** কর্মবিরতিতে বিএসইসি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
** রাইটের শেয়ারের অর্থ নিয়ে বিএসইসির নজরদারি
** ১২ জনকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা জরিমানা
** ডরিন পাওয়ারের বিরুদ্ধে বিএসইসির তদন্ত শুরু
** বিও অ্যাকাউন্টে বার্ষিক ফি কমলো ৩০০ টাকা
** অর্থ তছরুপ সন্দেহে অ্যাগ্রো অর্গানিকা নজরদারিতে
** ৭০ জনের বিনিয়োগ আছে ৫০০ কোটি টাকার বেশি
** পুঁজিবাজারে আসছে ১০ বহুজাতিক কোম্পানি
** পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট ৯ জনের পাসপোর্ট বাতিল
** বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য পাঁচ সুখবর
** ‘১৫ হাজার কোটি টাকা পাচার হয় পুঁজিবাজার থেকে’
** টানা পতনে বাজার মূলধন কমেছে ২১ হাজার কোটি