দুই কমিশনারসহ পাঁচজনের সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক

** পাঁচজনের মধ্যে দুইজন কমিশনার, একজন অতিরিক্ত কমিশনার, একজন উপকর কমিশনার ও একজন কর পরিদর্শক রয়েছে

দুর্নীতি, অনিয়ম ও মোট অংকের ঘুসের বিনিময়ে কর ফাঁকিতে সহায়তা করা হয়েছে। এছাড়া রাজস্বের ক্ষতি করে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন এমন পাঁচজন কর্মকর্তার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যার মধ্যে দুইজন কাস্টমসের কমিশনার রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে দু’দফায় মোট ১১ জন কর্মকর্তার অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। এই নিয়ে মোট ১৬ জন কর্মকর্তার অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান করছে দুদক। যার মধ্যে বেশিরভাগ কর্মকর্তা এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সক্রিয় সদস্য ছিলেন।

এনবিআরের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তরের এই পাঁচজন কর্মকর্তা হলেন-কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা (পূর্ব) এর কমিশনার কাজী মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, রাজশাহী কর অঞ্চল, সার্কেল-৭ এর উপকর কমিশনার মো. মামুন মিয়া (বর্তমানে যুগ্ম কর কমিশনার), আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকা ও কর অঞ্চল-২, ঢাকার কর পরিদর্শক লোকমান আহমেদ। এর মধ্যে সেহেলা সিদ্দিকা এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের মহাসচিব এবং লোকমান আহমেদ সক্রিয় সদস্য।

এই পাঁচ কর্মকর্তার বিষয়ে দুদক বলছে, বিগত কয়েক বছর ধরে তারা বিভিন্ন স্টেশনে চাকুরিকালীন বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শুল্ক, ভ্যাট ও ক্ষেত্র বিশেষে আয়কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে ও নিজে লাভবান হয়ে রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মাধ্যমে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে এই পাঁচজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদক তথ্যানুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কতিপয় অসাধু সদস্য ও কর্মকর্তা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অংকের ঘুসের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন। এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও এনবিআরের কর্মকর্তারা নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য নির্ধারিত পরিমাণ কর আদায় না করে তাদের করের পরিমাণ কমিয়ে দিতেন মর্মে অভিযোগ পেয়েছে দুদক। এক্ষেত্রে প্রতিবছর সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা ঘুস না পেয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মালিককে হয়রানি করেছে বলেও জানা গেছে।

দুদক বলছে, অনেক করদাতা আগাম কর দেন। আবার কেউ কেউ বেশি কর দেন। নিয়ম হচ্ছে এই কর হিসাব-নিকাশ করার পর বেশি দেওয়া হলে তা ওই করদাতাকে ফেরত দিতে হয়। কিন্তু তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ আর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, করের বাড়তি টাকা ফেরত পেতে আরো অন্তত অর্ধেক টাকা ঘুষ বা উপহারে খরচ হয়। অভিযোগ রয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর কর্মকর্তারা করের টাকা ফেরত দিতে নিজেরাও কামিয়ে নিচ্ছেন মোটা টাকা।

** তিন সদস্য ও এক কমিশনার বাধ্যতামূলক অবসরে
** চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার জাকির হোসেন বরখাস্ত
** শাটডাউন ও মার্চ টু এনবিআর কর্মসূচি প্রত্যাহার

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!