ভূমি মন্ত্রণালয় ২০২৫ সালের মধ্যে পাঁচ ধরনের জমির দখল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে, এমনকি দলিল থাকা সত্ত্বেও। সম্প্রতি প্রকাশিত সরকারি পরিপত্র ও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এসব জমি যদি অবৈধভাবে দখলে থাকে, তবে তা ছাড়তে হবে এবং প্রয়োজন হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারি পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘দলিল যার, ভূমি তার’ ধারণা সবক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। অনেক ক্ষেত্রে দলিল বৈধ হলেও জমির মালিকানা এবং দখল আইনি দিক থেকে বৈধ নয়। আদালতের রায় ছাড়া এসব জমির দখলদারিত্ব অব্যাহত রাখা যাবে না। ফলে যারা বছরের পর বছর এসব জমি ব্যবহার করে আসছেন, তাদের এখনই আইনি প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সরকার যে পাঁচ ধরনের জমিকে চিহ্নিত করেছে, তা নিম্নরূপ:
১. সাব-কবলা দলিল
যেসব সাব-কবলা দলিল উত্তরাধিকার বণ্টন না করে করা হয়েছে এবং কোনো ওয়ারিশকে বঞ্চিত করা হয়েছে, সেগুলো বাতিলযোগ্য। বঞ্চিত উত্তরাধিকারী আদালতে মামলা করলে দখলদারের দলিল খারিজ হয়ে যেতে পারে।
২. হেবা দলিল
যেসব হেবা দলিল দাতার সম্পূর্ণ মালিকানা না থাকা, সঠিক প্রক্রিয়ায় গ্রহণ না করা বা শর্ত ভঙ্গ করে করা হয়েছে, সেগুলোও বাতিলযোগ্য।
৩. জাল দলিল
বর্তমানে ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনার কারণে জাল দলিল শনাক্ত করা সহজ হয়েছে। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুর্নীতির মাধ্যমে তৈরি দলিলও বাতিল হবে, যদি প্রকৃত মালিক যথাযথ প্রমাণ উপস্থাপন করেন।
৪. খাস খতিয়ানের সম্পত্তি
সরকারি খাস খতিয়ানে থাকা জমি যদি কেউ নিজের নামে করে বিক্রি করে থাকেন, তবে সেই দলিল বাতিল হবে এবং জমি সরকারের নিয়ন্ত্রণে ফিরে যাবে। প্রয়োজনে জেলা প্রশাসককে আইনি লড়াইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৫. অর্পিত সম্পত্তি
যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ের পরিত্যক্ত অর্পিত সম্পত্তি ব্যক্তিগতভাবে দখলে রাখা যাবে না। এসিল্যান্ডের মাধ্যমে এসব জমি চিহ্নিত করে সরকারকে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে।
পরিপত্রের মূল লক্ষ্য হলো সরকারের নিজস্ব সম্পত্তি পুনরুদ্ধার করা এবং জনগণের অধিকার নিশ্চিত করা। সরকারি সূত্র জানায়, এসব পদক্ষেপের ফলে সাধারণ মানুষ তাদের ন্যায্য সম্পত্তি ফিরে পাবে এবং সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে।