এস আলমকে সুবিধা: তিন কর কর্মকর্তা বরখাস্ত

অবৈধ সুবিধা নিয়ে এস আলম গ্রুপের কালো টাকা সাদা করে দেওয়ায় তিন কর কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বৃহষ্পতিবার অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সই করা পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এই তিন কর্মকর্তা কর অঞ্চল-১, চট্টগ্রামে কর্মরত থাকাবস্থায় এস আলম গ্রুপের কালো টাকা সাদা করেছেন।

এর আগে ১৯ সেপ্টেম্বর করদাতা থেকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে কর কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম আকন্দকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তিনি কর চট্রগ্রাম কর আপীলাত ট্রাইবুন্যাল, দ্বৈত বেঞ্চ এর সদস্য ছিলেন। কর কমিশনারকে বরখাস্তের ২৮ দিন পর কর অঞ্চল-১, চট্টগ্রাম এর সাবেক তিন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হলো।

তিনজন হলেন-বর্তমানে চট্টগ্রাম কর আপীল অঞ্চল কর্মরত অতিরিক্ত কর কমিশনার সাইফুল আলম। এর আগে তিনি কর অঞ্চল-১, চট্টগ্রাম এর যুগ্ম কর কমিশনার ছিলেন। কর অঞ্চল-১৪, ঢাকার যুগ্ম কর কমিশনার এ কে এম শামসুজ্জামান। এর আগে তিনি কর অঞ্চল-১, চট্টগ্রামের যুগ্ম কর কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কর অঞ্চল-২, চট্টগ্রাম এর সহকারী কর কমিশনার মো. আমিনুল ইসলাম। এর আগে তিনি কর অঞ্চল-১, চট্টগ্রাম এর অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার (ইএসিটি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

তিনটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৩৯(১) ধারা মোতাবেক সরকারি চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন তারা বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন। উল্লেখ্য, ধারা ৩৯(১) সাময়িক বরখাস্তের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় কারর্য্ধারা গ্রহণের প্রস্তাব বা বিভাগীয় কারর্যকধারা রুজু করা হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অভিযোগের মাত্রা ও প্রকৃতি, অভিযুক্ত কর্মচারীকে তাহার দায়িত্ব হইতে বিরত রাখিবার আবশ্যকতা, তৎকর্তৃক তদন্তকে র্যে প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা, ইত্যাদি বিবেচনা করিয়া তাহাকে সাময়িক বরখাস্ত করিতে পারিবে।

এনবিআর সূত্রমতে, কর অঞ্চল-১, চট্টগ্রামের করদাতা এস আলম গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটিকে সুবিধা দিতে বিশেষ করে কালো টাকা সাদা করতে একাট্রা ছিলেন আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা। তারা আইন উপেক্ষা করে সুবিধা দিয়েছেন এস আলম গ্রুপকে। সাবেক একজন কর কমিশনার ও কর কর্মকর্তারা এস আলম গ্রুপ ও গ্রুপের কর্ণধারদের অবৈধ সুবিধা দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে হলে নড়েচড়ে বসে এনবিআর। এরই ধারাবাহিকতায় তদন্ত কমিটি গঠন করে এনবিআর। এই তদন্তে উঠে আসে কর কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি। তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকেই তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

অপরদিকে, মো. শফিকুল ইসলাম আকন্দ ১৮ সেপ্টেম্বর চট্রগ্রাম কর আপিল থেকে কর অঞ্চল-৭, ঢাকায় বদলি করা হয়। বদলি আদেশ জারির একদিন পর ১৯ সেপ্টেম্বর তাকে বরখাস্ত করা হয়। গত ২ সেপ্টেম্বর নিজ কার্যালয়ে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। চট্টগ্রামের কর আপিলের সদস্য থাকায় অবস্থায় এক করদাতা তার বিরুদ্ধে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ করেন। বিষয়টি এনবিআরকে খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত হওয়ায় তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। নতুন কর অঞ্চলে বদলির একদিন পরই তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর আগে করদাতাদের হয়রানির কারণে রাজশাহী থেকে খুলনায় বদলি করা হয়। সর্বশেষ তাকে চট্রগ্রাম আপিলে বদলি করা হয়। তিনি বিসিএস ১৩ ব্যাচের আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তা।

** ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে কর কমিশনার বরখাস্ত

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!