টিউলিপরে অর্থপাচার ১২ দেশে তদন্ত হচ্ছে

যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগে অন্তত ১২টি দেশে তদন্ত চলছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য টাইমস।

গণঅভ্যুত্থারে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করছে দুদক। কিছু অর্থ বিদেশে সম্পত্তি কেনায় ব্যবহৃত হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, যিনি ২০১৫ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি, এ তদন্তের অন্তর্ভুক্ত।

তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে দুদকের এক মুখপাত্র দ্য টাইমসকে জানান, প্রাথমিক প্রতিবেদনে শুধু যুক্তরাজ্য নয়, অন্যান্য দেশেও অর্থ পাচারের তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্ত দল বিভিন্ন দেশে পারস্পরিক আইনি সহায়তা চেয়ে তথ্য ও প্রমাণের অনুরোধ পাঠিয়েছে। শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্তের অংশ হিসেবে ১০-১২টি দেশের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। বিদেশে পাচার করা অর্থ উদ্ধারে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তার আশ্বাস পাওয়া গেছে।

এদিকে ব্রিটেনের ‘ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি’র (এনসিএ) কর্মকর্তারা জানুয়ারির শেষ দিকে ঢাকায় কয়েক দিন অবস্থান করে দুদকের তদন্তে সহায়তা করেছেন।লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টারমারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু টিউলিপপের নাম দুদকের তিনটি তদন্তে এসেছে। তাকে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে লাভবান হওয়া, তার খালাকে পরিবারের সদস্যদের জন্য জমি বরাদ্দ দিতে প্রভাবিত করা এবং অর্থপাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

টিউলিপ সবসময় এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন এবং সূত্রগুলো বলছে, এই অভিযোগ তার খালার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের সাজানো। টিউলিপের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘এই অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। টিউলিপ সিদ্দিকের সাথে কেউ যোগাযোগ করেনি এবং তিনি এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন।’

জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরুর পর টিউলিপ সিদ্দিকের পরিবারের রাজনৈতিক সংযোগ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণের ঝুঁকি তৈরি করে, যার ফলে তিনি মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন।

টিউলিপ সিদ্দিক প্রথমে দাবি করেছিলেন, লন্ডনের কিংস ক্রসের সাড়ে ছয় লাখ পাউন্ড মূল্যের ফ্ল্যাটটি তার বাবা-মা উপহার দিয়েছেন। তবে পরে জানা যায়, এটি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ডেভেলপার আবদুল মোতালিফ কিনেছেন।

ডিসেম্বরে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করে। দুদক ১২০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করলেও সময় বাড়তে পারে। তদন্ত শেষে বাংলাদেশ সরকার তার প্রত্যর্পণের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!