ছাগলকাণ্ডে আলোচনায় থাকা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমান একমি পেস্টিসাইডের শেয়ার নিলেও তার বিনিময়ে কোনো অর্থ প্রদান করেননি। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তদন্তে এই অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে। এ ধরনের দুর্নীতি অভিযোগের কারণে বিএসইসি বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এনবিআরের সাবেক সদস্য মতিউর রহমানের পাশাপাশি একমি পেস্টিসাইডের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালক, কোম্পানি সচিব, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) এবং অন্যান্য কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানও একই ধরনের অনিয়ম করেছেন। এদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৯৭৩তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, একমি পেস্টিসাইডের ওপর পরিচালিত অনুসন্ধান ও তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায় কোম্পানির চেয়ারম্যান শান্তা সিনহা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজা-উর-রহমান সিনহা, পরিচালক আহসান হাবিব সিনহা, পরিচালক কে এম হেলুয়ার, কোম্পানি সচিব সবুজ কুমার ঘোষ, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সেলিম রেজা এবং প্লেসমেন্ট হোল্ডার মো. আফজাল হোসেন, এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, মো. মতিউর রহমান, বিক্রমপুর পটেটো ফ্লেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, তফাজ্জল হোসেন ফরহাদ, জাভেদ এ মতিন, বেঙ্গল অ্যাসেটস হোল্ডিংস লিমিটেড, চিটাগাং পেস্টিসাইডস অ্যান্ড ফিশারিজ লিমিটেড, হেরিটেজ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, এনআরবি ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, আঞ্জোমান আরা বেগম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শেখ মোহাম্মদ সারোয়ার, এনআরবি ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড (এমডিএ), তৌহিদা আক্তার, মো. রুহুল আজাদ ও রানু ইসলাম শেয়ারের বিপরীতে কোনো অর্থ পরিশোধ করেননি। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রতিবেদনটি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিএসইসির মুখপাত্র জানান, একমি পেস্টিসাইডের ইস্যু ম্যানেজার শাহজালাল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড প্রসপেক্টাসে মিথ্যা বা অসংগত তথ্য দাখিলের মাধ্যমে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটির নিবন্ধন সনদ বাতিলের প্রক্রিয়া শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রি-আইপিও কালীন কোম্পানির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানির বাস্তব আর্থিক অবস্থা সন্নিবেশিত করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে নিরীক্ষক সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় এনফোর্সমেন্ট প্রক্রিয়া শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান আবুল কালাম। তিনি আরও জানান, আইপিওর মাধ্যমে সংগ্রহ করা অর্থ ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয়ে কোম্পানির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে যথাযথ তথ্য সন্নিবিশিত নেই। এ কারণে নিরীক্ষক শফিক বসাক অ্যান্ড কোং-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলে (এফআরসি) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।