বিদেশি চিকিৎসকদের ফি, হোটেল ভাড়ায় ভ্যাট অব্যাহতি

জুলাই অভ্যূত্থানে আহতদের চিকিৎসা

জুলাই অভ্যূত্থানে আহতদের চিকিৎসা দিতে বাংলাদেশে এসেছেন বিভিন্ন পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। বর্তমানে এসব চিকিৎসকরা আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। আহতদের প্রতি সম্মান জানিয়েছে বিদেশি এসব চিকিৎসকদের ফি বা কনসালটেন্সি সেবা ও হোটেল ভাড়ার উপর মূল্য সংযোজন কর বা মূসক অব্যাহতি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) এনবিআরের প্রথম সচিব (মূসক বাস্তবায়ন) মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম সই করা বিশেষ আদেশ জারি করা হয়েছে। এর আগে ২৮ জানুয়ারি কর অব্যাহতি দিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এনবিআর চিঠি দেওয়া হয়।

এনবিআরের আদেশে বলা হয়েছে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে বিদেশ থেকে আগত বিভিন্ন পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ফি বা পরামর্শ বা কনসালটেন্সি সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর বা মূসক অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। যেহেতু, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর প্রথম তফসিলের দ্বিতীয় খন্ড (মূল্য সংযোজন কর হইতে অব্যাহতিপ্রাপ্ত সেবাসমূহ) এর মাধ্যমে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সেবা এবং বেসরকারি পর্যায়ে প্রদত্ত চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সেবাকে মূল্য সংযোজন কর হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। সেহেতু, এনবিআর, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ৪৭ নং আইন) এর ধারা ১২৬ এর উপ-ধারা (৩) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণে আগত বিদেশি চিকিৎসকদের অনুকূলে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদেয় ফি, হোটেল ভাড়া (আপ্যায়ণ ব্যয়সহ) এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য মূসক হতে অব্যাহতি প্রদান করল।

অপরদিকে, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, গণঅভ্যুত্থানে আহত রোগীদের চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ পাঁচজন চক্ষু চিকিৎসক আগামী ১-২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে অবস্থান করে আহত রোগীদের চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রদান করবেন। বাংলাদেশে অবস্থানকালীন হোটেলে থাকা এবং খাবার ব্যয় ও এয়ারপ্লেন ভাড়া বাবদ ৫৩ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে আহত রোগীদের চক্ষু চিকিৎসা সেবার কর সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে ২০ শতাংশ হারে কর কর্তনের বিধান উল্লেখ রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে বিদেশ থেকে আগত বিভিন্ন পর্যায়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ফি বা পরামর্শ বা কনসালটেন্সি প্রদান এবং এ সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সেবাসমূহ সংগ্রহের ক্ষেত্রে ভ্যাট ও ট্যাক্স কর্তন করা হলে সংশ্লিষ্ট খাতে মূল বরাদ্দে অর্থের সংস্থান কমে যাবে ফলে সংশ্লিষ্ট খাতের ভ্যাট ও ট্যাক্স মওকুফ করা প্রয়োজন। ভবিষ্যতেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ বাংলাদেশে ভ্রমণ, অবস্থান ও চিকিৎসা সেবা বা পরামর্শ প্রদানের সম্ভাবনা রয়েছে বলে চিঠিতে আরো বলা হয়েছে।

জানা গেছে, শহীদ ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অধিদপ্তর’ করতে যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে শহীদের সংখ্যা ৮৩৪ জন আর আহতদের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। মূলত এই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি রক্ষা করতে এবং আহত ও নিহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে কাজ করবে এ অধিদপ্তর। সরকারের গণঅভ্যুত্থান-সংক্রান্ত বিশেষ সেল ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ‘শহীদ’ ও আহত ব্যক্তিদের প্রথম ধাপের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছিল গত ২১ ডিসেম্বর।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!