যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের কারণে বিশ্ববাণিজ্যে বিঘ্ন ঘটেছে, বিশেষ করে এশিয়ার দেশগুলোতে। এশিয়ার অধিকাংশ দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি হয়। শুল্ক আরোপের ফলে এই খাতে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে গত ২০ এপ্রিল লিবারেশন ডে উপলক্ষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওই শুল্ক আরোপের পরও বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক আমদানি বেড়েছে। ফাইবার টু ফ্যাশনের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
গত জুন মাসের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল (টিএন্ডএ) রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, যা ৪৪ দশমিক ৬ শতাংশে পৌঁছেছে। একই সময়ে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনামের রপ্তানি বৃদ্ধি হয়েছে ২৬ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে, ২০২৫ সালের শুরুতে শক্তিশালী অবস্থানে থাকা ভারতের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি জুন মাসে অনেকটাই মন্থর হয়ে গেছে। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের তুলনায় দেশটি অনেক পিছিয়ে রয়েছে। গত বছরের জুনের তুলনায় এই বছরের জুনে ভারতের রপ্তানি মাত্র ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বছরের প্রথম প্রান্তিকের চেয়ে অনেক কম।
চীনও এই খাতে পতনের মুখে রয়েছে। জুনের তথ্যে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে চীনের রপ্তানি ৪১ শতাংশ কমেছে। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি (সিআইটিআই) জানিয়েছে, টানা তিন মাস ধরে এই অবস্থা চলছে। সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেল (ওটেক্সা)-এর তথ্য উদ্ধৃত করে এই তথ্য প্রকাশ করেছে। এছাড়া তারা জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের টেক্সটাইল ও পোশাক বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা বাড়ছে।
২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা ২০২৪ সালের একই সময়ে ছিল ৩ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। একই সময় ভিয়েতনামের টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল (টিএন্ডএ) রপ্তানি ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৮ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যেখানে পূর্বে ছিল ৭ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে ভারতের রপ্তানি ১১ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৫ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা পূর্বের ৪ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে বেশি। চীনের রপ্তানি ১৬ দশমিক ২ শতাংশ কমে ৯ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে, যেখানে পূর্বে ছিল ১১ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার।