ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান। শনিবার (৯ আগস্ট) গভীর রাতে নিজের বাসভবনের সামনে তিনি জানান, ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তা বহাল থাকবে এবং প্রতিটি হল প্রশাসন নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন— ‘এ মুহূর্তে খবর এলো, হল রাজনীতি নিষিদ্ধ হলো।’ এর আগে সেদিন সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়, যা নিয়ে শুরু হয় নানা সমালোচনা ও বিতর্ক। এর প্রতিবাদে এবং হলগুলোতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিভিন্ন হল থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
রাত ১২টার দিকে মুহসীন হল থেকে মিছিল শুরু করে আন্দোলনকারীরা মাস্টারদা সূর্যসেন হল হয়ে হলপাড়া ও ভিসি চত্বর প্রদক্ষিণ করে রোকেয়া হলের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় তারা স্লোগান দেন— ‘জুলাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, হল পলিটিক্স নো মোর’, ‘গেস্টরুমের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘গণরুমের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘হলে হলে রাজনীতি চলবে না চলবে না’ ইত্যাদি।
রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা ফটকের তালা ভেঙে বিক্ষোভে যোগ দেন। আন্দোলনকারীরা রাত ১টা পর্যন্ত রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নেন। এরপর তারা মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে চলে যান। রাত দেড়টার দিকে উপাচার্য বের হয়ে আসেন এবং শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি তুলে ধরে।
এ সময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, আমরা ১৭ জুলাই নেওয়া ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তের অবস্থানেই আছি। তবে ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে হলে ছাত্রসংগঠনগুলো কি আচরণবিধি মেনে চলছে, তা পর্যবেক্ষণে তোমাদের সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রয়োজন।
এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ বাকবিতণ্ডা হয়। পরে রাত পৌনে ৩টার দিকে উপাচার্য হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) মামুন আহমেদ, প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমদ, প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ ফারুক শাহ।