এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান কিবরিয়া গোলাম মোহাম্মদ ও সিইও শাহ জামাল হাওলাদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত চেয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গত সোমবার বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান এম আসলাম আলমের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠিতে অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেকের কাছে ১৯ জুন এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইনস্যুরেন্সের এক পলিসি হোল্ডার কোম্পানির চেয়ারম্যান ও সিইওর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতেই আইডিআরএ চেয়ারম্যানকে তদন্তের নির্দেশ দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বুধবার (২৫ জুন) আইডিআরএর চেয়ারম্যান এম আসলাম আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংস্থাটির মুখপাত্রের সঙ্গে কথা বলতে পরামর্শ দেন। পরে আইডিআরএর মুখপাত্র সাইফুন্নাহার সুমি জানান, ‘বিষয়টি সদ্য পাওয়া গেছে। শিগগিরই এ বিষয়ে কার্যক্রম শুরু হবে।’
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, কিবরিয়া গোলাম মোহাম্মদ সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ইতালি আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাঁর স্ত্রী হোসনে আরা বেগম সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের নারীবিষয়ক সম্পাদক। তাদের প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করেন সিইও শাহ জামাল হাওলাদার। অভিযোগে দাবি করা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থায়নকারী হওয়ায় ২০২১ সালে উপঢৌকন হিসেবে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইনস্যুরেন্সকে লাইসেন্স দেওয়া হয়। শুরুর দিকে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম ভালো চললেও, পরে আওয়ামী লীগের তহবিলে চাঁদা দেওয়া, অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের কারণে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা ক্রমেই খারাপ হতে থাকে।
আইডিআরএর আগের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, এনআরবি ইসলামিক লাইফের চেয়ারম্যান ও সিইওর যোগসাজশে অনুমোদনহীন বিমা পরিকল্প বিক্রি, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়, উচ্চ হারে পলিসি তামাদি হওয়া, কোম্পানির বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ হাতে রাখা এবং একক প্রিমিয়ামকে মেয়াদি হিসেবে দেখিয়ে তহবিল লোপাটের মতো অনিয়ম ঘটেছে। অভিযোগপত্রে এসব বিষয় উল্লেখ করে আত্মসাৎ ও পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে প্রশাসনিক ও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।
কোম্পানির চেয়ারম্যান কিবরিয়া গোলাম মোহাম্মদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। কোম্পানি সূত্রে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি দেশের বাইরে থাকতে পারেন, তবে দেশে আছেন এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সিইও শাহ জামাল হাওলাদারের সঙ্গে খুদে বার্তার মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরে কথা বলার আশ্বাস দিয়েছেন।