চিনির বাজার দর সহনীয় ও স্থিতিশীল রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করে অপরিশোধিত ও পরিশোধিত চিনির ওপর বিদ্যমান রেগুলেটরি ডিউটি ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বুধবার (৯ অক্টোবর) এই সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ এ মু’মেন।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান এবং বন্যা পরিস্থিতির কারণে শিশু খাদ্যসহ কতিপয় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণপূর্বক কর ছাড়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, রেগুলেটরি ডিউটি ১৫ শতাংশ হ্রাসের মাধ্যমে আমদানি পর্যায়ে প্রতি কেজি অপরিশোধিত চিনির ওপর শুল্ক কর ১১.১৮ টাকা এবং পরিশোধিত চিনির ওপর শুল্ক কর ১৪.২৬ টাকা কমানো হয়েছে। এতে চিনির কেজি প্রতি মূল্য কমপক্ষে শুল্ক হ্রাসের সমপরিমাণ কমে আসবে বলে মনে করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এই শুল্ক কর হ্রাসকরণের ফলে অবৈধ পথে চিনির চোরাচালান নিরুৎসাহিত হবে এবং বৈধ উপায়ে আমদানি বাড়বে বিধায় শুল্ক কর আদায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
বাজারে চিনির দাম স্বাভাবিক ও সাশ্রয়ী মূল্য ধরে রাখতে গত ৫ অক্টোবর অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে শুল্ক কমানোর সুপারিশ করে সম্প্রতি এনবিআরকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। চিঠিতে আপরিশোধিত ও পরিশোধিত চিনি আমদানিতে বিদ্যমান নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) ৩০ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করার সুপারিশ করে প্রতিষ্ঠানটি। যেখানে ট্যারিফ কমিশন শুল্ক কমানোর পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি উপস্থাপন করেছে।
জানা গেছে, বেশ কয়েকদিন ধরে পাইকারি বাজারে চিনির বস্তায় প্রায় ২০০ টাকার মতো বেড়েছে। তাতে খুচরা বাজারেও কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১২৮ থেকে ১৩৫ টাকা দরে। চিনির উর্ধ্বমুখি বাজারে আমদানি শুল্ক কমানোর এই সিদ্ধান্ত বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
বর্তমানে প্রতি টন পরিশোধিত ও অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে শুল্ককর রয়েছে মোট ৫২ শতাংশ, যারমধ্যে ভ্যাট ১৫ শতাংশ, এইআইটি ২ শতাংশ, আরডি ৩০ শতাংশ এবং এটি ৫ শতাংশ। এছাড়া অপরিশোধিত প্রতি টনে কাস্টমস ডিউটি রয়েছে ৩ হাজার টাকা আর পরিশোধিত চিনিতে রয়েছে ৬ হাজার টাকা।