চার বছর আগে দুবাই বিমানবন্দরে লাগেজ বদল হয়ে যায় ভিএসকে ডায়মন্ড অ্যান্ড জুয়েলারির মালিক ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভিসাঙ্ক সঞ্জয় কোথারির। তার লাগেজে ছিল ২,২৫৭.১৮৬ গ্রাম স্বর্ণ, যার বাজারমূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। ভুলবশত সেই লাগেজ নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চলে আসেন প্রবাস ফেরত শাহজাহান মিয়া। সেখানে বিমানবন্দরের স্ক্যানার মেশিনে ধরা পড়ে স্বর্ণের অস্তিত্ব। পরে কাস্টমস অফিস স্বর্ণগুলো জব্দ করে এবং শাহজাহান মিয়াকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়।
পরে লাগেজে থাকা স্বর্ণের একটি ক্রয় ইনভয়েসের সূত্র ধরে মুক্তি পান শাহজাহান মিয়া। পুলিশ ইনভয়েসে উল্লেখ থাকা ইমেইলে যোগাযোগ করে জানতে পারে, স্বর্ণগুলোর প্রকৃত মালিক ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভিসাঙ্ক সঞ্জয় কোথারি। দুবাই বিমানবন্দরে লাগেজ বদলে যাওয়ার কারণে স্বর্ণ খোয়া যায় এবং এ বিষয়ে তিনি দুবাই পুলিশের কাছেও অভিযোগ করেন। কিন্তু সেই ভুলের দায় এসে পড়ে প্রবাস ফেরত শাহজাহান মিয়ার ওপর। ঘটনাটি ঘটে ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর। ওই ঘটনায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫-বি(১)(বি)/২৫-ডি ধারায় মামলা দায়ের করেন ঢাকা কাস্টমস হাউজের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা কে এম রেদওয়ানুল ইসলাম।
পরবর্তীতে শাহজাহান মিয়ার মুক্তির পর ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল ‘এক পুলিশ কর্মকর্তার তদন্তে রক্ষা পেলেন প্রবাস ফেরত শাহজাহান’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২০২৫ সালের ১৪ জুলাই আদালতের রায়ে দেড় কোটি টাকার স্বর্ণ ফেরত পান প্রকৃত মালিক, ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভিসাঙ্ক সঞ্জয় কোথারি।
পুলিশ জানায়, স্বর্ণ ফেরত পেতে ওই ব্যবসায়ী দুবাইয়ে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত এবং ঢাকায় নিযুক্ত দুবাইয়ের রাষ্ট্রদূতসহ বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এসব দপ্তরের কর্মকর্তারা পরে বিমানবন্দর থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সব দিক বিবেচনায় আদালতের নির্দেশে ব্যবসায়ীকে দেড় কোটি টাকার স্বর্ণ ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. আসাদুজ্জামান শেখ (বর্তমানে পুলিশ পরিদর্শক) জানান, প্রায় চার বছর পর আদালত স্বর্ণ প্রকৃত মালিককে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন। এ সংক্রান্ত আদেশ জারি হয় ৯ জুলাই, আর ১৪ জুলাই ঢাকা কাস্টমস কর্মকর্তারা স্বর্ণ হস্তান্তর করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা কাস্টমস হাউজের ডেপুটি কমিশনার বিল্লাল হোসেন, দুবাই ডিপ্লোমেটিক অ্যাফেয়ার্স অফিসার ক্যাপ্টেন বিডার আল জাফিন এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভিসাঙ্ক সঞ্জয় কোথারি।