চার ট্রেনে এক সিট পেতে কাটতে হয় ৩-৪ টিকেট

বার্তা প্রতিবেদক: ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জ যেতে মহুয়া কমিউটার ট্রেনের সিটে বসে যাত্রা করতে হলে এক সিটের বিপরীতে ৩ থেকে ৪টি টিকিট কাটতে হয়। তা না হলে বসতে পারেন না যাত্রী। এমনকি দাঁড়িয়ে যেতে চাইলেও একটি সিটের সম্পূর্ণ ভাড়া পরিশোধ করতে হয়। আছে বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগও। শুধু মহুয়া নয়, তিতাস কমিউটার, রাজশাহী কমিউটার এবং জামালপুর কমিউবেসটারসহ চারটি ট্রেনে একইভাবে অতিরিক্ত টিকেট কাটা ও অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগ। বাংলাদেশ রেলওয়ের আওতায় ট্রেনটি চললেও কর্তৃপক্ষের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই রেলওয়ের, তাই তারা ইচ্ছে মতো ভাড়া আদায় করে। দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিমের অভিযানে এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) কমলাপুর রেলস্টেশনে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তারের নেতৃত্বে ৫ জনের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান পরিচালনা করে। দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ শফিউল্লাহ অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ সকাল ৯টা থেকে কমিউটার ট্রেনগুলোর টিকিটের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে মহুয়া কমিউটার, তিতাস কমিউটার, রাজশাহী কমিউটার এবং জামালপুর কমিউবেসটারসহ চারটি ট্রেনের সার্ভিসের বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করে। টিম ছদ্মবেশে মূল ঘটনা জানার চেষ্টা করে এবং উপস্থিত যাত্রীদের কাছে ঘটনার সত্যতা পায়।

ACC Rail 1

দুদক সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জ যাওয়ার জন্য মহুয়া কমিউটার ট্রেনে একটি সিটের বিপরীতে তিনটি টিকিট কাটতে হয়। দুদক অভিযোগ কেন্দ্র-১০৬ এ এরূপ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কমলাপুর রেলস্টেশনে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সকাল ৯টা থেকে কমিউটার ট্রেনগুলোর টিকিটের যে বেসরকারি ব্যবস্থাপনা তা পর্যবেক্ষণ করে মহুয়া কমিউটার, তিতাস কমিউটার, রাজশাহী কমিউটার এবং জামালপুর কমিউটারসহ চারটি ট্রেনের সার্ভিস সেখানে দেখা যায়।

কোন যাত্রী যদি সিট নিয়ে যেতে চান, তাহলে তাকে একটি সিটের বিপরীতে বাধ্যতামূলক দুই/তিন/চারটি টিকিট কিনতে হয়। আর দাঁড়িয়ে যেতে চাইলে একটি সিটের সম্পূর্ণ ভাড়া প্রদান করতে হয় এবং প্রত্যেককেই ১৫ থেকে ২০ টাকা ভাড়া বেশি দিতে হয়। বেসরকারি এই কমিউটার সার্ভিসগুলো বাংলাদেশ রেলওয়ের আওতায় চললেও তাদের ওপর রেলওয়ের নিয়ন্ত্রণ নেই। তারা ইচ্ছে মতো ভাড়া আদায় করে। ট্রেন আসার এক ঘণ্টা পূর্বে টিকিট বিক্রি শুরু করে এবং যাত্রীদের হয়রানি করে।

ACC Rail 2

সরেজমিনে ঘটনার সত্যতা পেয়ে স্টেশন ম্যানেজার এবং স্টেশন মাস্টারের সঙ্গে টিম কথা বলে এবং তারা ইতোপূর্বে এরকম অভিযোগ পেয়েছেন বলেও জানান। বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য তাৎক্ষণিক ডিআরএম শফিকুর রহমান এবং ডিসিও (ডিভিশনাল কমার্শিয়াল অফিসার) শাহ আলমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি। দুদক জানায়, এনফোর্সমেন্ট টিম স্টেশন ম্যানেজারের কাছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ট্রেন সার্ভিসের জন্য যে চুক্তি হয়েছে তার বিষয়ে জানতে চায়। চুক্তি অনুযায়ী, তারা রেলওয়ের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করবে, ট্রেন সার্ভিস দেবে এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের সহযোগী হিসেবে যাত্রী সেবা প্রদান করবে। রেলওয়ের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় তারা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ যাত্রীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। এসব অনিয়মের বিষয়ে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলে জানা গেছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!