মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের হঠাৎ হঠাৎই ফোন করে বসেন। এটা যেন তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্যামেরার সামনে বসে সাক্ষাৎকার দেওয়ার চেয়ে হঠাৎ টেলিফোনে কথা বলাটাই বেশি পছন্দ করেন। ‘সোমবার সন্ধ্যায় আমার পালা এল। আর সত্যি বলতে কী, হোয়াইট হাউস থেকে যখন ফোন করল, তখন আমি ঘুমিয়ে ছিলাম’ বলে জানান বিবিসির উত্তর আমেরিকা বিষয়ক প্রধান সংবাদদাতা গ্যারি ও’ডোনোহু।
গত পাঁচ দিন ধরেই মনে হচ্ছিল, পেনসিলভানিয়ার বাটলারে ট্রাম্পের ওপর হামলার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে হয়তো তার সাক্ষাৎকার নেওয়ার সুযোগ পাবো। কারণ, ওই হামলা নিয়ে করা আমার প্রতিবেদনটি বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল—সম্ভবত সেখান থেকেই প্রেসিডেন্টের দৃষ্টিতে পড়েছি আমি। তাই ভেবেছিলাম, এই যোগাযোগ হয়তো আমাকে একটি দুর্লভ সাক্ষাৎকারের সুযোগ এনে দেবে—যেটা সাধারণত বিদেশি সংবাদমাধ্যমের জন্য বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে পাওয়া খুব সহজ নয়। রোববার রাতে আমাকে জানানো হয়েছিল, কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফোন আসবে। তাই আমি এবং আমার দল রেকর্ডিংয়ের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই কলটি আর এল না।
শেষ পর্যন্ত গত রাতেও ধরে নিয়েছিলাম, আর বুঝি সাক্ষাৎকারটা হচ্ছে না। কয়েক সপ্তাহ টানা রাস্তায় থাকার পর একটানা কাজ করে কোনো বিশ্রাম না পাওয়ায় আমি বেশ ক্লান্ত ছিলাম, সেই ক্লান্তিতেই একটু ঘুমিয়ে পড়ি। ঠিক তখনই ফোনটা বেজে উঠল। ঘুমচোখে ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে ভেসে এল প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিটের কণ্ঠ—‘হাই গ্যারি, আমি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আছি, কথা বলুন।’ আমি ছুটে গেলাম বসার ঘরে, তড়িঘড়ি করে ডিজিটাল রেকর্ডার খুঁজতে শুরু করলাম। এর মধ্যেই লাইন কেটে গেল। তখন মনে হয়েছিল, এবার বুঝি আর কিছুই হবে না। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা আবার কল করল—আর শুরু হলো প্রায় ২০ মিনিটের এক গুরুত্বপূর্ণ কথোপকথন। আলোচনায় উঠে এল সেই দুঃখজনক রাতের স্মৃতি, ভ্লাদিমির পুতিন নিয়ে ট্রাম্পের ক্ষোভ, ন্যাটো নিয়ে তার নতুন অবস্থান এবং যুক্তরাজ্য নিয়ে তার নানা ভাবনার কথা।