গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও ব্যাংক কর্মকর্তা

ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার সিলোনীয়া বাজার শাখায় সাউথইস্ট ব্যাংকের কর্মকর্তা জিয়াউল হক গ্রাহকদের কাছ থেকে কোটি টাকা নিয়ে হঠাৎ গা-ঢাকা দিয়েছেন। গত সাত বছর ধরে তিনি ওই শাখায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। রোববার (৪ মে) ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ অডিট টিম শাখায় উপস্থিত হলে তিনি পালিয়ে যান। এরপরই ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা প্রতারণার বিষয়ে মুখ খুলতে শুরু করেন।

জানা যায়, ২০১৮ সালে ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের সিলোনীয়া বাজারে শাখা উদ্বোধন করে সাউথইস্ট ব্যাংক। উদ্বোধনের পর থেকেই কর্মরত রয়েছেন ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠান নগরের বাসিন্দা জিয়াউল হক। তার কর্মস্পৃহা ও যোগাযোগ দক্ষতায় ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে চালু হওয়া এ শাখাটি গ্রাহক বান্ধব হয়ে ওঠে। কিন্তু বিগত কয়েকমাস ধরে তিনি গ্রাহকদের টাকা নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন।

সর্বশেষ রোববার (৪ মে) ব্যাংকের অভ্যন্তরীন অডিট টিম ওই শাখায় কাজ শুরু করলে তিনি পালিয়ে যান। এদিকে সোমবার (৫ মে) বিষয়টি জানাজানি হলে ব্যাংকের গ্রাহক ও জিয়াউল হকের কাছে পাওনাদার ব্যক্তিরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং শাখায় এসে হৈ-হুল্লোড শুরু করে। অনেক গ্রাহক ব্যাংকে এসে তাদের হিসাবের স্থিতি চেক করতে ভিড় জমান। গ্রাহকদের ধারণা, আরটিজিএসের মাধ্যমে তিনি রেমিটেন্সের কোটি টাকা নিয়ে হঠাৎ উধাও হয়ে গেছেন।

ব্যাংক সূত্র জানায়, জিয়াউল হক ওই শাখায় জুনিয়র অফিসার হিসেবে রেমিটেন্স বিভাগে দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি আরটিজিএস কার্যক্রমে নিয়োজিত ছিলেন এবং সেখান থেকেই গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার (৪ মে) ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট রেজাউল কবিরের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি অডিট দল শাখায় তদন্তে গেলে হঠাৎ করেই জিয়াউল নিখোঁজ হন।

ব্যাংকের গ্রাহক প্রবাসী শফি উল্লার স্ত্রী জোসনা বেগম জানান, ব্যাংকের এ শাখার মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকা বিদেশ থেকে তার স্বামী রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। ব্যাংকের কর্মকর্তা জিয়াউল হক পালিয়ে গেছেন শুনে টাকা উঠিয়ে নিতে ব্যাংকে এসে টাকা উঠাতে পারেননি। এমতাবস্থায় তিনি মানসিক দুশ্চিন্তায় ভুগছেন।

আজাদ নামের এক গ্রাহক জানায়, আমি দীর্ঘদিন ধরে কর্মকর্তা জিয়াউল হককে দিয়ে আরটিজিএসের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতাম। তার কাছে আমার ৪০ লাখ টাকা রয়েছে। সোমবার ব্যাংকে এসে দেখি জিয়াউল নাই। সে নাকি পালিয়ে গেছে। ম্যানেজারকে বিষয়টি জানালে তিনি আমাকে ধৈয্য ধরতে অনুরোধ করেন।

জানতে চাইলে সাউথইস্ট ব্যাংকের সিলোনিয়া শাখার ব্যবস্থাপক ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার কামরুজ্জামান বলেন, অডিট টিম আসার খবর জানার পর থেকেই জিয়াউল ইসলাম পলাতক। রোববার রাতে আমরা তার খোঁজ নিতে গিয়ে তার স্ত্রীকে ডাকি, কিন্তু জিয়াউলের কোনো সন্ধান মেলেনি। তিনি বলেন, টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন, তাই এই মুহূর্তে এ বিষয়ে মন্তব্য করা উপযুক্ত হবে না। অডিট সম্পন্ন হওয়ার পরই প্রকৃত ঘটনা পরিষ্কার হবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!