গ্রামীণ ব্যাংককে শর্ত সাপেক্ষে আয়কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ২০২৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই অব্যাহতি থাকবে। সরকারের দারিদ্র বিমোচন কর্মসূচীর সাথে গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যক্রমের সামঞ্জস্যপূর্ণ বিধায় আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৭৬ এর উপধারা (১) অনুযায়ী এই অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সই করা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এর আগে ২৭ আগস্ট কর অব্যাহতি চেয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এনবিআরকে চিঠি দেওয়া হয়। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে ২৫ সেপ্টেম্বর এনবিআরের বোর্ড সভায় গ্রামীণ ব্যাংককে কর অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৭৬ এর উপধারা (১) ক্ষমতাবলে, গ্রামীণ ব্যাংক আইন, ২০১৩ এর ধারা ৪ এর অধীন স্থাপিত গ্রামীণ ব্যাংকের অর্জিত সকল আয়কে এই আইনের অধীন আয়কর প্রদান হতে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। আইনের ধারা ৭৬ এর উপধারা (৫) ও (৬) পরিপালন সাপেক্ষে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। ২০২৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই অব্যাহতি বলবৎ থাকবে।
আয়কর আইনের ধারা ৭৬ এর উপধারা (১) বলা হয়েছে-বোর্ড, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোনো ব্যক্তিকে বা কোনো শ্রেণির ব্যক্তিদেরকে কর অব্যাহতি প্রদান করতে পারবে। কর অব্যাহতি পেতে হলে গ্রামীণ ব্যাংককে ধারা ৭৬ এর উপধারা (৫) ও (৬) পরিপালন করতে হবে। উপধারা (৫) ও (৬) বলা হয়েছে-কর দিবসের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করতে হবে; উৎসে কর কর্তন, সংগ্রহ ও জমা দেওয়া; কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত কোনো খাত হতে সকল প্রকার প্রাপ্তি ও আয় ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে গ্রহণ করা।
১৯৮৩ সালে সামরিক অধ্যাদেশের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সব সময়ই কর অব্যাহতি সুবিধা পেয়ে আসছে গ্রামীণ ব্যাংক। এই সুযোগ প্রতিষ্ঠানটি পেয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশের ৩৩ ধারার আওতায়। ২০১৩ সালে অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করা হলেও ওই ধারা অব্যাহত রয়েছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দীর্ঘ ২৮ বছর গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান। ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচনের চেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংক ও মুহাম্মদ ইউনূসকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়।
অপরদিকে, একই শর্তে ২০২৯ সালের জুন পর্যন্ত দানকৃত আয় থেকে অলাভজনক ধর্মীয় দাতব্য সংস্থা আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনকে কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আর আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-ভিত্তিক একটি অলাভজনক ধর্মীয় দাতব্য সংস্থা, যারা শিক্ষা, দাওয়াত ও মানবকল্যাণসহ বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে। ইসলামি পণ্ডিত শায়খ আহমাদুল্লাহ ২০১৭ সালে এ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন, তিনিই এর চেয়ারম্যান। সাম্প্রতিক বন্যার সময় আর আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের ত্রাণ তৎপরতা বেশ আলোচিত হয়।
***