গ্রামীণফোন শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৭০% চূড়ান্ত লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে গ্রামীণফোন লিমিটেড (জিপি)।যা সম্পূর্ণ নগদ লভ্যাংশ হিসেবে দেওয়া হবে।
এর আগে, গ্রামীণফোন ২০২৩ অর্থবছরের জন্য মোট ৩৩০% নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে আগেই ১৬০% অন্তর্বর্তী লভ্যাংশ বিতরণ করা হয়েছে। ২০২৪ সালে কোম্পানিটির মুনাফা হয়েছে ১২২.৭৩%।
গতকাল সোমবার পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর গ্রামীণফোন লভ্যাংশ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ঘোষণা অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরে গ্রামীণফোনের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২৬.৮৯ টাকা, যা আগের বছর ছিল ২৪.৪৯ টাকা। একই সময়ে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪৭.৯৫ টাকা।
আগামী ২৩ এপ্রিল ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬ ফেব্রুয়ারি।
গত এক বছরে গ্রামীণফোনের শেয়ারের সর্বোচ্চ দাম ছিল ৩৮৭ টাকা ও সর্বনিম্ন ২২১ টাকা। লভ্যাংশ ঘোষণার পর আজ কোম্পানিটির শেয়ারের দামের সীমা থাকবে না।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আট দিনে গ্রামীণফোনের শেয়ারের দাম প্রায় ১৩০ টাকা বা ৫৩% বেড়ে তিন বছর আগের অবস্থানে পৌঁছে যায়।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গ্রামীণফোনের ওপর বিশেষ নিরীক্ষা চালানো হয়, যা ১৯৯৭ থেকে ২০১১ সালের হিসাব পর্যালোচনা করে। এই নিরীক্ষার পর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কোম্পানিটির কাছে ১২,৫৮০ কোটি টাকা বকেয়া দাবি করে। বিষয়টি আদালতে গড়ায়, এবং আদালতের নির্দেশে গ্রামীণফোনকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করতে হয়েছিল।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নানা ধরনের বিধিনিষেধের আওতায় পড়েছিল দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফোন অপারেটরটিকে। তাতে এটির ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হয়। সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কারণে কোম্পানিটির শেয়ারের ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন বিনিয়োগকারীরা; কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রে উঠে এসেছে কোম্পানিটি।
গ্রামীণফোন মূলত নগদ লভ্যাংশ প্রদান করে। গত কয়েক বছরে কোম্পানিটি ২০২৩ সালে ১২৫%, ২০২২ সালে ২২০%, ২০২১ সালে ২৫০% এবং ২০২০ সালে ২৭৫% নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।