আসছে রমজানে দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে খেজুর আমদানিতে আমদানি শুল্ক ও সমুদয় অগ্রিম কর কমিয়েছে সরকার। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সই করা প্রজ্ঞাপন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। নতুন এই সুবিধা ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, পবিত্র রমজান মাসে খেজুরকে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য খেজুর আমদানির ওপর বিদ্যমান কাস্টমস ডিউটি ২৫ শতাংশ হতে হ্রাস করে ১৫ শতাংশ, অগ্রিম আয়কর ১০ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ৩ শতাংশ এবং বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে অর্থাৎ মোট করভার ৬৩ দশমিক ৬০ শতাংশ হতে হ্রাস করে ৩৮ দশমিক ৭০ শতাংশ করা হয়েছে।
এর আগে ১৭ নভেম্বর খেজুর আমদানিশুল্ক ও অগ্রিম আয়কর (এআইটি) কমানোর প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। খেজুর আমদানিতে আগাম আয়কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ, আগাম কর ৫ শতাংশ পুরোপুরি বাতিল এবং আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার সুপারিশ করে ট্যারিফ কমিশন। আমদানি করা খেজুরে ৬৩.৬০ শতাংশ করহার রয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের বাজার মূল্য সর্বসাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে সরকার আমদানিনির্ভর খাদ্য পণ্যের শুল্ক-কর হ্রাস এবং ক্ষেত্র বিশেষে সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করেছে। খেজুর একটি আমদানি নির্ভর ফল যা সব শ্রেণির মানুষের ইফতারের অপরিহার্য উপাদান।
আমদানিকারকেরা জানান, শুল্কের কারণে আমদানি করা খেজুরের দাম দেশে আসার পর অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। আমদানি নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার ২০২২ সালে খেজুরসহ বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ককর বাড়িয়ে দিয়েছিল। খেজুর আমদানিতে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক, ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট), ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর, ৫ শতাংশ অগ্রিম কর ও ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক মিলিয়ে মোট করভার প্রায় ৫৯ শতাংশ।
অপরদিকে, এনবিআরের মুখপাত্র ও জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ এ মু’মেন সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের বাজার মূল্য সর্বসাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে সরকার আমদানিনির্ভর খাদ্য পণ্যের শুল্ক-কর হ্রাস এবং ক্ষেত্র বিশেষে সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করেছে। খেজুর একটি আমদানি নির্ভর ফল, যা মুসলমানদের ইফতারের অপরিহার্য উপাদান। পবিত্র রমজান মাসে খেজুরকে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার নিমিত্তে খেজুর আমদানির ওপর বিদ্যমান কাস্টমস ডিউটি ২৫ শতাংশ হতে হ্রাস করে ১৫ শতাংশ, অগ্রিম আয়কর ১০ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্যমান ৫ শতাংশ আগাম কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে অর্থাৎ মোট করভার ৬৩ দশমিক ৬০ শতাংশ হতে হ্রাস করে ৩৮ দশমিক ৭০ শতাংশ নির্ধারণ করে এনবিআর পৃথক দুইটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তিনি বলেন, খেজুর আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক-কর হ্রাস করার ফলে মানভেদে প্রতি কেজি খেজুরের আমদানি ব্যয় প্রায় ৬০ টাকা হতে ১০০ টাকা হ্রাস পেতে পারে। আমদানি পর্যায়ে শুল্ক-কর হ্রাসের ফলে খেজুরের আমদানি বৃদ্ধি পাবে, বাজারে খেজুরের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে এবং খেজুরের বিক্রয় মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে মর্মে এনবিআর মনে করে।