খাবার ও পানিকে মৌলিক অধিকার ঘোষণা

হাইকোর্ট নিরাপদ খাবার ও পানি মৌলিক অধিকার ঘোষণা করেছে। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। এর আগে, ২০২০ সালে দেশের নাগরিকদের জন্য নিরাপদ খাবার ও ব্যবহারযোগ্য পানি নিশ্চিত করতে সুয়োমোটো রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।

রুলে সব নাগরিকের জন্য নিরাপদ পানযোগ্য পানি সরবরাহ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব কিনা, অথবা এ নিরাপদ পানি পাওয়ার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করা যায় কিনা তা জানতে চেয়েছিলেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করেন।

আদালত রায়ে বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানযোগ্য পানি পাওয়া একটি মৌলিক অধিকার এবং এটি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। নিরাপদ পানীয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে আদালত বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। আগামী এক বছরের মধ্যে দেশের গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক স্থানগুলো যেমন আদালত, ধর্মীয় উপাসনালয়, হাসপাতাল, রেল স্টেশন, বাজার, এয়ারপোর্টসহ প্রতিটি পাবলিক প্লেসে নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া, আগামী ১০ বছরের মধ্যে দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে নিরাপদ পানি নিশ্চিত করতে হবে। ২০২৬ সালের মধ্যে পাবলিক প্লেসগুলোতে নিরাপদ পানি বিনামূল্যে সরবরাহের ব্যবস্থা কীভাবে নেয়া হয়েছে, সে বিষয়ে একটি রিপোর্ট আদালতে দাখিল করার জন্য সরকারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আদালত মামলাটি চলমান রেখেছে।

বাংলাদেশের সব পানির উৎসের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য, যাতে তা ক্ষয়ীভূত না হয়, শুকিয়ে না যায়, বা দূষিত না হয়, সেগুলোর সংরক্ষণে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এর আগে, এই মামলার শুনানিতে এমিকাস কিউরি হিসেবে সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং মিনহাজুল হক চৌধুরী মতামত প্রদান করেন।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। রায়টি বাস্তবায়িত হলে দেশের বৃহত্তম জনগণ উপকৃত হবে এবং পানিবাহিত রোগ থেকে মানুষ রক্ষা পাবে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!