বার্তা প্রতিবেদক: কাস্টমস এজেন্টস লাইসেন্সিং বিধিমালা সংশোধন, এইচএস কোড ও সিপিসি নির্ধারণে বিভিন্ন বিতর্কিত আইন বাতিলের দাবিতে সারাদেশে কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনে সিএন্ডএফ এজেন্টরা কর্মবিরতি পালন করছেন। মঙ্গলবার (৭ জুন) ফেডারেশন অব বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের ডাকে সকাল থেকে এই কর্মবিরর্তি শুরু হয়।
৭ জুন মঙ্গলবার পুর্নদিবস কর্মবিরতি পালন করতে ৪ জুন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন থেকে সব কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনের সিএন্ডএফ এজেন্টদের অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠি দেয়া হয়। সভাপতি শামছুর রহমান ও মহাসচিব মো. সুলতান হোসেন খান সই করা এই চিঠি দেয়া হয়। অ্যাসোসিয়েশন থেকে বলা হয়েছে-মূলত তিনটি দাবি বাস্তবায়নে এই কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে-কাস্টমস এজেন্ট লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০২০ তে কয়েকটি বিধি রাখা হয়েছে, যেটা কাস্টমস এজেন্টদের মৌলিক অধিকার পরিপন্থী। প্রকৃত এইচ এস কোড ও অপ্রকৃত এইচ এস কোড ঘোষণার ফলে ২০০ শতাংশ জরিমানার বিধান বাতিল ও সিপিসি নির্ধারণে প্রণীত আইন বাতিল করা।
অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা জানিয়েছেন, একজন আমদানিকারক যখন কোনো পণ্য আমদানির কথা চিন্তা করেন, তখন তাকে কয়েকটি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে প্রোফরমা ইনভয়েস দাখিল করে এলসি খোলা। সেক্ষেত্রে ইনভয়েস এ পণ্যের নাম ও এইচএস কোড ঘোষণা করতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুসরণ করে ব্যাংক ঘোষিত ইনভয়েসে আমদানিকারকের পক্ষে এলসি খোলার পর রপ্তানিকারক পণ্য চালানটি সংশ্লিষ্ট বন্দরে প্রবেশ করায়। এরপর আনুষঙ্গিক কাগজপত্রাদি ব্যাংক সার্টিফাইড করার পর একজন সিএন্ডএফ এজেন্টের নিকট প্রেরণ করেন পণ্যচালানটি ছাড়করণের জন্য। সিএন্ডএফ এজেন্ট যখন কাস্টমসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করেন শুল্কায়নের জন্য, তখন হয়তো নমুনা দৃষ্টিতে অফিসার ঘোষিত এইচএস কোড অসামাঞ্জস্য মনে করছেন। এমন হচ্ছে যে ঘোষিত এইচএস কোড আমদানিকারকের বিপক্ষে দিয়ে পণ্য চালানটিতে শুল্ক ফাঁকি অভিযোগে এনে ২০০ শতাংশ জরিমানা করা হচ্ছে। যেটা নিশ্চিত ভাবে ব্যবসা পরিপন্থী। ৫০০০ প্লাস আমদানি পণ্যের প্রতিটার এইচএস কোড কারো পক্ষে জানা সম্ভব না, আবার একই এইচএস কোড ব্যবহার করে সমজাতীয় শত শত পণ্য শুল্কায়ন হয়ে থাকে প্রতিটি পণ্যের সুনির্দিষ্ট কোড না থাকায়। সঠিক ও যথাযথ কোড নির্ধারণ করে শুল্কায়নের জন্য অফিসার। তাই কোড ভুলের অজুহাত দিয়ে ২০০ শতাংশ জরিমানা অমানবিক। জরিমানা হতে পারে তবে সেটা কোনো ভাবেই একজন রাজস্ব প্রদানকারী ব্যবসায়িকের ক্ষতি না করে। আবার দেখা যায় এই ভুল এর সহযোগী হিসেবে সিএন্ডএফ এজেন্টকে দোষী করা হচ্ছে। যেখানে প্রতিষ্ঠানটির জড়িত থাকার সম্ভাবনা নাই বললেই চলে।
নেতারা আরও জানিয়েছেন, এনবিআর প্রণীত কাস্টমস এজেন্ট লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০২০ মৌলিক অধিকার পরিপন্থী। সেজন্য এই বিধিমালা সংশোধন প্রয়োজন। সব কাস্টম হাউসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল, শুল্কায়ন, ব্যাংক ড্রাফট, পে অর্ডারসহ কাজ কাজ বাদ দিয়ে শান্তি পূর্ণভাবে কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে।
###