ভ্যাট-কাস্টমস সম্প্রসারণ সচিব কমিটিতে

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়ে আসছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চলতি বছরও সেই চিত্রে পরিবর্তনের সম্ভাবনা ক্ষীণ। এই বাস্তবতায় ভ্যাট আদায় বাড়াতে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি। একই সঙ্গে তারা নতুন কাস্টম হাউস, কমিশনারেট এবং বিশেষায়িত দপ্তর স্থাপনের পরিকল্পনাও তুলে ধরেছে।

এনবিআরের এমন প্রস্তাবে সায় দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগ। নতুনভাবে ৩৫৯৭টি পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এর মধ্যে ক্যাডার ৩৭৩টি এবং অন্যান্য ৩২২৪টি পদ। এসব পদ সৃষ্টির প্রস্তাব (৮ মে) বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে উঠতে যাচ্ছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদের সভাপতিত্বে এই বৈঠক হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে ২০২২ সালের শুরুতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) মোট ১১ হাজার ৯২১টি নতুন পদ সৃষ্টির প্রস্তাব দেয়। যাচাই-বাছাই শেষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৬ হাজার ১৯৬টি পদের অনুমোদন দেয়। পরবর্তীতে অর্থ বিভাগ ৩ হাজার ৫৯৭টি পদের অনুমোদন চূড়ান্ত করে। এখন সচিব কমিটির অনুমোদন মিললে প্রধান উপদেষ্টার চূড়ান্ত অনুমোদনের পর পদ সৃষ্টির প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এরপর নিয়োগ কার্যক্রম শুরুর জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) জানিয়েছে, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অনুবিভাগের বর্তমান কাঠামো অনুমোদিত হয়েছে ২০০৯-১০ অর্থবছরে। বর্তমানে সারা দেশে ৬টি কাস্টম হাউস, ১২টি ভ্যাট কমিশনারেট, দুটি বন্ড কমিশনারেট, চারটি আপিল কমিশনারেট, একটি এলটিইউ (মূসক), দুটি অধিদপ্তর, একটি পরিদপ্তর এবং একটি শুল্ক মূল্যায়ন ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিশনারেটের মাধ্যমে পরোক্ষ কর আদায় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু এই কাঠামো বর্তমান রাজস্ব আদায়ের বিস্তৃত পরিধির তুলনায় খুবই সীমিত। কারণ, গত দুই দশকে রাজস্ব আহরণ ৭২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও নিবন্ধিত মূসক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে ২১৫ শতাংশ, রিটার্ন দাখিলকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫৬ শতাংশ, আমদানি বেড়েছে ৫ গুণ, রপ্তানি বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি, বন্ডেড প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬৬ শতাংশ এবং আগমন-বহির্গমন যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে ৬ গুণ।

জানতে চাইলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য কাজী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এনবিআরে কাজের পরিধি ব্যাপকভাবে বেড়েছে, তবে জনবল তেমন বাড়ানো হয়নি। গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে ভ্যাট প্রদানের উপযুক্ত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু সেখানে ভ্যাট আদায়ের জন্য কোনো অফিস নেই। চট্টগ্রামেও প্রতিষ্ঠান বেড়েছে, কিন্তু জনবল বৃদ্ধি পায়নি। যদি এক্সাইজ ও ভ্যাট অনুবিভাগের জনবল বাড়ানো যায়, তবে সারাদেশে ভ্যাট আদায়ের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে।

বাড়ানো হচ্ছে কাস্টম হাউস ও কমিশনারেটের সংখ্যা

বর্তমানে দেশে ৬টি কাস্টম হাউস, ১২টি কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, ৪টি কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপিল) কমিশনারেট এবং ৪টি বিশেষায়িত অফিস রয়েছে। নতুন প্রস্তাবে কাস্টম হাউস ৪টি, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ৫টি এবং বিশেষায়িত অফিস ৫টি বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ৩ হাজার ৫৮৭টি পরিবহন কেনার পরিকল্পনাও রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে কার, জিপ, মাইক্রোবাস, মিনিবাস ও বাস।

** নতুন চার কাস্টম হাউস ও আট ভ্যাট কমিশনারেট হচ্ছে
** ফিডার পদ পূরণে আজগুবি শর্ত, হতাশ কর্মচারীরা
** কর্মকর্তারা ইন্সপেক্টর-সুপারিনটেনডেন্ট পদবি ফেরত চান

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!