কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিলের সম্ভাবনা

বাজেট ২০২৫-২৬

অ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট ক্রয় এবং ভবন নির্মাণে অপ্রদর্শিত অর্থ ব্যবহারের সুযোগ বাতিল হতে পারে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বাড়তি করের বিনিময়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার প্রস্তাব দেওয়া হলেও, তা থেকে সরে আসতে পারে সরকার। এ ধরনের সুবিধাকে অনৈতিক ও বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে টিআইবি, সিপিডিসহ বিভিন্ন সংস্থা চূড়ান্ত বাজেটে এটি বাতিলের সুপারিশ করেছে।

সূত্র জানায়, সোমবার (১৭ জুন) সকালে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে অর্থ সচিবসহ অর্থ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। দুপুরে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বহাল রাখা এবং ফ্ল্যাট নিবন্ধন ব্যয় কমানোর দাবিতে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে রিহ্যাবের একটি প্রতিনিধি দল। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান, রিহ্যাবের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুর রাজ্জাকসহ কার্যনির্বাহী কমিটির ৯ সদস্য। আলোচনায় কিছু যৌক্তিক দাবি মানার আশ্বাস দেওয়া হলেও, অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ বাতিলের ইঙ্গিত মিলেছে। আগামী ২২ জুন উপদেষ্টা পরিষদ চূড়ান্ত বাজেট অনুমোদন দেবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান বলেন, অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার সুযোগ বাতিলের বিষয়টি সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তবে রিহ্যাব এ সুযোগ বহাল রাখার পক্ষে জোরালো দাবি জানিয়েছে। সরকার সব দিক বিবেচনা করে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেবে।

বৈঠকে রিহ্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটে আবাসন খাত মন্দার মধ্যে রয়েছে। তাই এই খাতে সহজ শর্তে অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। তাদের মতে, এই সুযোগ না থাকলে আগের মতোই অর্থ বিদেশে পাচারের ঝুঁকি বাড়বে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অনিচ্ছাকৃতভাবে অপ্রদর্শিত অর্থ আয়কর রিটার্নে দেখানোর সুযোগ আয়কর আইনে বিদ্যমান। আইনটির ১৯(বি) ধারায় বলা হয়েছে, কেউ রিটার্ন দাখিলের সময় যদি কোনো সম্পত্তি উল্লেখ করতে ভুলে যান, তবে নির্ধারিত শর্ত পূরণ সাপেক্ষে তা পরবর্তী করবর্ষে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ রয়েছে।

রিহ্যাবের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেছেন, সামগ্রিক অর্থনৈতিক বাস্তবতায় আবাসন খাতকে সচল রাখতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ চালু রাখার দাবি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে ফ্ল্যাটের প্রথম ক্রেতার ক্ষেত্রে মোট নিবন্ধন ব্যয় ৭ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং রেজিস্ট্রেশনের সময় মূলধনি মুনাফার ওপর কর ৪ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছেন তারা। এ ছাড়া জমির বর্তমান মৌজা মূল্য বহাল রাখা এবং রড, সিমেন্ট, রং, প্লাস্টিকসহ নির্মাণসামগ্রীর ওপর আরোপিত অতিরিক্ত কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন রিহ্যাব নেতারা।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!