কর প্রত্যর্পণের নিষ্পত্তি চায় নন-বন্ড ট্যানারি মালিকরা

ট্যানারি শিল্পের নন-বন্ড ট্যানারি ও বাণিজ্যিক রপ্তানিকারকদের কর প্রত্যর্পণ আগের নিয়ম অনুযায়ী অথবা আগের মতো নতুন কোন বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে নিষ্পত্তির অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ)। সম্প্রতি ট্যানারি শিল্প মালিকদের সংগঠনটি এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চিঠি দিয়ে দিয়েছে।

বিটিএ জানিয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, জাতীয় প্রবৃদ্ধি এবং মূল্য সংযোজনের ক্ষেত্রে চামড়া শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ট্যানারি শিল্পের প্রধান কাঁচামাল কাঁচা চামড়া, যা দ্রুত পচনশীল। এ কারণে বৈদেশিক ক্রেতা বা ভবিষ্যৎ বিক্রয়মূল্য নির্ধারণের আগেই রপ্তানিকারকরা শুল্ক ও ভ্যাট পরিশোধ করে আমদানিকৃত কেমিক্যাল ব্যবহার করে কাঁচা চামড়াকে ওয়েট-ব্লু আকারে সংরক্ষণ করেন। পরবর্তীতে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী তা ক্রাস্ট, ফিনিশড ও স্প্লিট চামড়ায় রূপান্তর করে রপ্তানি করা হয়।

রপ্তানি উৎসাহিত করা ও টেকসই রপ্তানিকারক গড়ে তোলার লক্ষ্যে মূল্য সংযোজন কর আইন-১৯৯১ এর ধারা ১৩-এর উপধারা (৩) প্রবর্তন করা হয়। এর আওতায় শুল্ক, রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তর (ডেডো) পূর্ববর্তী অর্থবছরের আমদানির গড় মূল্য বিবেচনায় নিয়ে গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়ার চামড়া দিয়ে প্রক্রিয়াজাত ক্রাস্ট, ফিনিশড ও স্প্লিট চামড়া উৎপাদনে ব্যবহৃত আমদানিকৃত কাঁচামালের উপর প্রদত্ত শুল্ক-কর সমহারের ভিত্তিতে প্রত্যর্পণ প্রদান করত। রপ্তানিকারকরা নিয়ম অনুযায়ী ২০১৮-২০১৯ অর্থবছর পর্যন্ত এ সুবিধা যথাযথভাবে পেয়ে আসছিলেন। কিন্তু ২০১৯-২০২০ অর্থবছর থেকে কোনো আলোচনা ছাড়াই ‘শুল্ক ও আরডি’ সমহারের ভিত্তিতে প্রত্যর্পণ কার্যকর হয়। নতুন সমহার অনুযায়ী রপ্তানিকারকরা আগের তুলনায় ৬০ থেকে ৭৫ শতাংশ কম প্রত্যর্পণ পান। এতে আর্থিকভাবে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ায় এখনো কোনো রপ্তানিকারক এই হ্রাসকৃত হারে প্রত্যর্পণ গ্রহণ করেননি।

চিঠিতে বিটিএ বলছে, প্রথমত, প্রত্যর্পণ হার কমে যাওয়ায় নন-বন্ড ট্যানারি ও বাণিজ্যিক রপ্তানিকারকরা তাদের প্রত্যাশিত প্রত্যর্পণ পাচ্ছেন না বিধায় আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকতে পারছেন না। তাতে ক্ষুদ্র শিল্প সুরক্ষা করার নীতি বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, বন্ড ট্যানারি বা শিল্প রপ্তানিকারকরা একদিকে শুল্ক-কর মুক্ত কেমিক্যাল আমদানি করেন অন্যদিকে তারা নগদ সহায়তা পান। কিন্তু বাণিজ্যিক রপ্তানিকারকরা নগদ সহায়তা পান না। ফলে প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজারে প্রতিযোগী মূল্যে নন-বন্ড ট্যানারি বা বাণিজ্যিক রপ্তানিকারকরা পণ্য বিক্রিতে ব্যর্থ হন।

এতে নন-বন্ড ট্যানারি বা বাণিজ্যিক রপ্তানিকারকরা তিনটি বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে পড়েন। যেমন-প্রত্যাশিত প্রত্যর্পণ পান না, বাণিজিক প্রতিযোগীর তুলনায় বেশি শুল্ক-কর দিয়ে উৎপাদন উপকরণ আমদানি করতে হয় এবং উৎপাদন ব্যয় বেশি হওয়ায় ও তা মোকাবেলার অন্য কোন পথ না থাকায় প্রতিযোগীর সঙ্গে সমতা রেখে বিক্রি করতে পারেন না।

এ পরিস্থিতিতে, নন-বন্ড ট্যানারি বা বাণিজ্যিক চামড়া রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের বাঁচানোর তাগিদ ও নতুন চামড়া রপ্তানিকারক সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রত্যর্পণ হার বিবেচনা করে প্রত্যর্পণের পেন্ডিং দাবি পাট শিল্পের ন্যয় নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছে বিটিএ।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!