কর নথি গায়েব: উপকর কমিশনার বরখাস্ত

আয়কর নথি গায়েব করে প্রায় ১৪৬ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকিতে সহায়তা করার অভিযোগে উৎসে কর ব্যবস্থাপনা ইউনিটে কর্মরত উপকর কমিশনার লিংকন রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সই করা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তবে এর আগে একই ঘটনায় সে সময়ের কর অঞ্চল-৫, ঢাকার কর কমিশনার আবু সাঈদ মো. মুস্তাক ও কর কমিশনার মো. গোলাম কবীরকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় সরকার। এছাড়া বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) অনুসন্ধান শেষে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই তিন কর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে।

মো. আবদুর রহমান খান সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, উৎসে কর ব্যবস্থাপনা ইউনিট, ঢাকায় কর্মরত উপকর কমিশনার লিংকন রায়। এই কর্মকর্তা কর অঞ্চল-৫, ঢাকায় কর্মরত থাকাকালে তৎপূর্বে কর্মরত উপকর কমিশনার জানে আলম কর্তৃক ধামসুর ইকোনমিক জোন লিমিটেডের ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ করবর্ষের নিষ্পত্তিকৃত আয়কর মামলার নতুন আদেশপত্র (আইটি-৩৯) এবং কর নির্ধারণ আদেশ (আইটি-৮৮) সৃজনের মাধ্যমে নতুন কর দাবি সৃষ্টি করেন। যাতে সরকারের ১৪৬ কোটি ৫৭ লাখ ৪৬ হাজার ৫৫৩ টাকা রাজস্ব ক্ষতি সাধিত হয়েছে। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সেজন্য লিংকন রায়কে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ১২ (১) অনুযায়ী চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। তিনি সাময়িক বরখাস্তকালীন বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য পাবেন।

DCT Linkon Roy

অপরদিকে, নথি গায়েব করে ১৪৬ কোটি টাকার কর ফাঁকিতে সহায়তার অভিযোগে কর অঞ্চল-৫, ঢাকার সাবেক কর কমিশনার (পরে এনবিআর সদস্য হিসেবে কর্মরত অবস্থায় সরকার তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়) আবু সাঈদ মো. মুস্তাকসহ তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন দিয়েছে দুদক। বৃহস্পতিবার কমিশন এই অনুমোদন দিয়েছে। শিগগিরই দুদকের সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন ইসলাম মামলাটি দায়ের করবেন বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে। মামলার অপর দুই আসামি হলেন—কর অঞ্চল-৫, ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত কর কমিশনার মো. গোলাম কবীর (পরে কমিশনার হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় সরকার তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়) এবং উপকর কমিশনার লিংকন রায়।

গত ৯ জুলাই নথিপত্র গায়েব করে কর অঞ্চল-৫, ঢাকা থেকে ১৪৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকার কর ফাঁকির ঘটনায় দুদক এ বিষয়ে এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালায়। অভিযানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।

অনুসন্ধান প্রতিবেদনের সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ কর বর্ষে ধামশুর ইকোনমিক জোন লিমিটেডের বিরুদ্ধে মোট ১৪৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা কর দাবি করা হয়েছিল। তবে কর্মকর্তা বদলির পর নতুন কর্মকর্তা নথিতে কর নির্ধারণী আদেশ পরিবর্তন ও সংশোধন করে কর দাবির পরিমাণ যথাক্রমে শূন্য টাকা ও ১ হাজার টাকা নির্ধারণ করে সরাসরি রাজস্ব ফাঁকিতে সহায়তা করেন। এছাড়া মূল কর নির্ধারণী আদেশের নথিও গায়েব করা হয়, যা দুদকের অভিযানে পাওয়া যায়নি।

** নথি গায়েব করে ১৪৬ কোটি ফাঁকি, আসামি ৩ কর্মকর্তা
** কর্মকর্তা বদলিতে ১৪৬ কোটির কর হলো ‘শূন্য’, নথি গায়েব
** প্রতীক গ্রুপকে সুবিধা দিয়ে চাকরি হারালেন দুই কর্মকর্তা
** ‘একজন প্রবাসী শ্রমিক ৭৩১ কোটি টাকা এনে বলছেন এটা করমুক্ত’
** দুই কর কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসর
** তিন সদস্য ও এক কমিশনার বাধ্যতামূলক অবসরে
** সংযুক্তির ৭ দিন পরই কমিশনারকে অবসরে পাঠানো হলো

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!