করমুক্ত আয়ের সীমা পুনর্বিবেচনার দাবি

ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) করমুক্ত আয়ের সীমা পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি, তারা সরকারের বাজেট ঘাটতি মেটাতে স্থানীয় ব্যাংক ব্যবস্থার বদলে বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ এবং অপ্রয়োজনীয় ও অনুৎপাদনশীল ব্যয় কমানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো তুলে ধরেছে।

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটের বিষয়ে বুধবার (৪ জুন) এফবিসিসিআই এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। সংগঠনটি অর্থ উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানিয়ে উল্লেখ করেছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর নতুন প্রেক্ষাপটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং খাদ্য নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি যৌক্তিক ও বাস্তবায়নযোগ্য বাজেট প্রণয়নে বিশেষ চেষ্টা করেছে।

গত সোমবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আগামী অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন। এটি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এফবিসিসিআই মনে করে, নতুন বাজেট কার্যকর করার জন্য দক্ষতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও তদারকির মান উন্নয়নে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা এবং পরিকল্পনা অপরিহার্য।

অর্থ উপদেষ্টা প্রস্তাবিত বাজেটে আগামী ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ অর্থবছরের করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছেন। তবে বাজেটের আগে এফবিসিসিআই করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে চার লাখ টাকা করার সুপারিশ করেছিল। বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় এফবিসিসিআই করমুক্ত আয়ের সীমা পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে। সংগঠনটি জানিয়েছে, নতুন করদাতাদের জন্য ন্যূনতম কর এক হাজার টাকা নির্ধারণ করায় তাঁরা উৎসাহিত হবেন।

প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩.৬ শতাংশ। এই ঘাটতি পূরণের জন্য সরকারকে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিতে হবে। এফবিসিসিআই জানায়, সরকারি ঋণ ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত গ্রহণ বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে, যা বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাই বাজেট ঘাটতি মেটাতে স্থানীয় ব্যাংক ব্যবস্থার পরিবর্তে সুলভ সুদে ও সতর্কতার সঙ্গে বৈদেশিক উৎস থেকে অর্থায়ন নেওয়ার প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সংগঠনটি।

ই-কমার্স খাতে ভ্যাট বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছে এফবিসিআই। সংগঠনটি উল্লেখ করেছে, অনলাইনে পণ্য বিক্রির কমিশনের ওপর ভ্যাট হার ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করলে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

প্রস্তাবিত বাজেটে ১৫ হাজার নতুন উদ্যোক্তা গড়ে তোলা, ২৫ হাজার উদ্যোক্তাকে দক্ষতা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদান, এবং নারী উদ্যোক্তা ও প্রান্তিক পর্যায়ের কুটির, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতের ১০ হাজার উদ্যোক্তার মধ্যে ১ হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণের উদ্যোগকে এফবিসিসিআই স্বাগত জানিয়েছে। সংগঠনটি আরও জানিয়েছে, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে ১২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে এবং তরুণ-যুবাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার উদ্যোগও ইতিবাচক।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!