## শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর পাঁচটি, বাথ অপারেটর দশটি, টার্মিনাল অপারেটর তিনটি
## নদী পথে লাইটার জাহাজ দ্বারা পণ্য পরিবহনকারী লাইটারেজ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ২৭টি
## ৭১টি প্রতিষ্ঠান ২৩৩২ ব্যাংক হিসাবে লেনদেন করে, করফাইলে নেই সম্পদের হিসাব
## টাকা পাচার হয়েছে হুন্ডিতে, পাচার করা টাকায় বিদেশে কেনা হয়েছে বাড়ি-গাড়ি
বিশেষ প্রতিনিধি: পণ্য পরিবহন, বোঝাই আর খালাসে নেয়া হয়েছে বিল। সে বিল কেবল কোটি টাকা নয়, হাজার হাজার কোটি টাকা। কিন্তু আদায় করা বিলের টাকা সঠিকভাবে দেখানো হয়নি আয়কর ফাইলে। এমন কি মালিকরাও নিজেদের ফাইলে সঠিকভাবে আয়ের টাকা দেখায়নি। আবার বিল থেকে ভ্যাট কর্তন করে জমা দেয়া হয়নি। চট্টগ্রাম বন্দর কেন্দ্রিক ৭১টি প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানের মালিকদের বিরুদ্ধে এভাবে আয়কর ও ভ্যাট ফাঁকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুধু ফাঁকি নয়, বিপুল পরিমাণ টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাচারেরও অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ অনুযায়ী ২০০৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১৪ বছরে প্রায় ৪৬ হাজার কোটি টাকার করফাঁকি দেয়া হয়েছে। আর আয় গোপন করা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানগুলোর করফাঁকি ও অর্থপাচার নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দুদক থেকে এনবিআরে পাঠানো হয়েছে। এনবিআর সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, ৭১টি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বন্দর কেন্দ্রিক ব্যবসা পরিচালনা করে। ব্যবসার ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, শিপিং এজেন্ট, আমদানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্ট, স্থাপনাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হতে হাজার হাজার কোটি টাকা বিল আদায় করে এসব প্রতিষ্ঠান। কিন্তু আদায় করা টাকা ও ব্যাংক লেনদেনের বেশিরভাগ রিটার্নে প্রদর্শন করা হয় না। আয়কর বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে তথ্য গোপন করা হয়। যার মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা করফাঁকি দেয়া হচ্ছে। এছাড়া আদায় করা টাকার বেশিরভাগ পাচার করা হয়। অভিযোগের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলোর করফাঁকি ও পাচারের তথ্যাদি সংযুক্ত করা হয়েছে।
৭১টি প্রতিষ্ঠান যেভাবে বিল আদায় করে: অভিযোগে বলা হয়, বন্দরে ৩১টি শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর কাজ করে আসছে। এসব অপারেটর বন্দরের সিমেন্ট ক্লিনকার জেটি হতে বর্হিনোঙ্গর, কুতুবদিয়া, মাতারবাড়ী এলাকায় আগত জাহাজসমূহের আমদানি করা বিভিন্ন ধরনের পণ্য খালাস এবং রপ্তানি পণ্য বোঝাইয়ের কাজ করে। শিপিং এজেন্ট, আমদানিকারক তাদের নিয়োগ দেয়। নিয়োগ পাওয়া অপারেটর কাজ শেষে ‘বাংলাদেশ শিপ হ্যান্ডলিং এন্ড বার্থ অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন’ কর্তৃক নির্ধারিত হারে বিল নেই।
আরো বলা হয়, ৩১টি প্রতিষ্ঠান বার্ষিক ১২ কোটি মেট্রিক টন পণ্য বোঝাই ও খালাস করেছে। সে হিসেবে ২০০৭ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ১৪ বছরে প্রায় ১৫৬ কোটি মেট্রিক টন পণ্য বোঝাই ও খালাস করেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, বিদেশ হতে ৫০ হাজার টন খোলা সার বস্তা ভর্তি করে জাহাজ হতে বর্হিনোঙ্গরে নেয়ার বিল করা হয় এক কোটি ৬৫ লাখ টাকা (প্রতি টন ৩৩০ টাকা)। ৩১টি প্রতিষ্ঠান বছরে ১২ কোটি মেট্রিক টন পণ্য খালাস করে। সে হিসেবে বছরে বিল আদায় করে প্রায় ৩ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। আর ১৪ বছরে আদায় করেছে ৫১ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা। প্রতিটি অপারেটর বন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট ৫০ লাখ টাকা নিরাপত্তা জামানত দেয়। সে হিসেবে ৩১টি প্রতিষ্ঠানের জামানত রয়েছে ১০ কোটি টাকা। অথচ এই টাকা অপারেটরগুলো রিটার্নে প্রদর্শন করেনি।
অপরদিকে, প্রতি অপারেটরের ২০টি গ্রাব, সাতটি পে-লোডার গাড়ি ও যন্ত্রপাতি রয়েছে। ২০টি গ্রাব এর মূল্য প্রায় চার কোটি (প্রতিটি ২০ লাখ), সাতটি পে-লোডারের দাম দুই কোটি ৮০ লাখ টাকা (প্রতিটি ৪০ লাখ) ও অন্যান্য যন্ত্রপাতির দাম প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। সে হিসেবে প্রতিটি অপারেটরের গ্রাব, পে-লোডার ও যন্ত্রপাতির দাম প্রায় ১০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। অথচ অপারেটরগুলো গ্রাব, লোডার ও যন্ত্রপাতির ক্রয়ের টাকা রিটার্নে প্রদর্শন করেনি।
অভিযোগে বলা হয়, শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর অ্যাসোসিয়েট ট্রেডার্স অ্যান্ড মেরিনার্স লি. ১৪ বছরে আদায় করেছে ২৩৩০ কোটি টাকা। এই অপারেটরের সম্পদের পরিমাণ ২৫০ কোটি টাকা। সে হিসেবে এই অপারেটরের মোট সম্পদ ২৫৮০ কোটি। কিন্তু ১৪ বছরে এই অপারেটর আয়কর ফাঁকি দিয়েছে ৫১৬ কোটি টাকা। একইভাবে আকমল খান এন্ড কোং আদায় করেছে ২৫৪০ কোটি টাকা। সম্পদের পরিমাণ ২৭৫ কোটি টাকা। আদায়সহ প্রতিষ্ঠানের মোট সম্পদ ২৮১৫ কোটি টাকা। ফাঁকি দিয়েছে ৫৬৩ কোটি টাকা। এ এস এল ষ্টিভিউটর এন্ড লজিস্ট্রিক লি. আদায় করেছে ২৭৭০ কোটি টাকা। সম্পদের পরিমাণ ৭০০ কোটি। আদায়সহ সম্পদ ৩৪৭০ কোটি টাকা। ফাঁকি দিয়েছে ৬৯৪ কোটি টাকা। এনসিএন্ট ট্রেডার্স লি. আদায় করেছে ২৪২০ কোটি টাকা। সম্পদের পরিমাণ ১৫০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ২৫৭০ কোটি টাকা। ফাঁকি দিয়েছে ৫১৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল শিপিং করপোরেশন আদায় করেছে ২০২০ কোটি টাকা। সম্পদের পরিমাণ ২১০ কোটি। আদায়সহ সম্পদের পরিমাণ ২২৩০ কোটি। ফাঁকি ৪৪৬ কোটি টাকা। বিএসটিসি শিপিং লি. আদায় করেছে ২৭৯০ কোটি টাকা। সম্পদ ২১০ কোটি। আদায়সহ মোট সম্পদ ৩ হাজার কোটি টাকা। ফাঁকি ৬০০ কোটি টাকা। ফিলিট ইন্টারন্যাশনাল লি. আদায় করেছে ২৮৯০ কোটি টাকা। সম্পদ ৪৩০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ৩৩২০ কোটি টাকা। ফাঁকি দিয়েছে ৬৬৪ কোটি টাকা। গ্রীণ এন্টারপ্রাইজ লি. আদায় করেছে ২৮৯০ কোটি টাকা। সম্পদ ৪৩০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ৩২৭০ কোটি টাকা। ফাঁকি ৬৫৪ কোটি টাকা।
গ্রেট বেঙ্গল এন্টারপ্রাইজ কোং আদায় করেছে ২৭৯০ কোটি টাকা। সম্পদ ৩৭৫ কোটি। আদায়সহ সম্পদ ৩১৬৫ কোটি টাকা। ফাঁকি ৬৩৩ কোটি টাকা। এইচসি মেরিন লি. আদায় করেছে ২৫১০ কোটি টাকা। সম্পদ ৩২০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ২৮৩০ কোটি টাকা। ফাঁকি ৫৬৬ কোটি টাকা। হাজী ইদ্রিস এন্ড সন্স লি. আদায় করেছে ২৪৯০ কোটি টাকা। সম্পদ ১৯০ কোটি। আদায়সহ সম্পদ ২৬৮০ কোটি টাকা। ফাঁকি ৫৩৬ কোটি টাকা। এইচ এস মেরিন এজেন্সি আদায় করেছে ২৬৩০ কোটি টাকা। সম্পদ ২৫০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ২৮৮০ কোটি টাকা। ফাঁকি ৫৭৬ কোটি টাকা। কে এম এজেন্সি আদায় করেছে ৩৩৪০ কোটি টাকা। সম্পদ ৩২০ কোটি। আদায়সহ সম্পদ ৩৬৬০ কোটি টাকা। ফাঁকি ৭৩২ কোটি টাকা। কে এস আবদুল হাকিম সন্স এন্ড কোং আদায় করেছে ৩০২০ কোটি টাকা। সম্পদ ৩১০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ মূল্য ৩৩৩০ কোটি টাকা। ফাঁকি ৬৬৬ কোটি টাকা। এম এ কালাম এন্ড কোং লি. আদায় করেছে ৩৫৬০ কোটি টাকা। সম্পদ ৫৯০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ৪১৫০ কোটি টাকা। ফাঁকি ৮৩০ কোটি টাকা। মমতাজ শিপিং এজেন্সি আদায় করেছে ২০০ কোটি টাকা। সম্পদ ১৫০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ৩৫০ কোটি টাকা। ফাঁকি ৭০ কোটি টাকা। এম এ নাছির এন্ড ব্রাদার্স আদায় করেছে ২৭৮০ কোটি টাকা। সম্পদ ২০০ কোটি। আদায়সহ সম্পদ ২৯৮০ কোটি টাকা। ফাঁকি ৫৯৬ কোটি টাকা।
নবাব এন্ড কোম্পানি আদায় করেছে ৩০২০ কোটি টাকা। সম্পদ ৪১০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ৩৪৩০ কোটি টাকা। ফাঁকি ৬৮৬ কোটি টাকা। ওসান এইড সার্ভিসেস লি. আদায় করেছে ১৮৯৫ কোটি টাকা। সম্পদ ১৫০ কোটি। আদায়সহ সম্পদ ২০৪৫ কোটি টাকা। ফাঁকি ৪০৯ কোটি টাকা। প্যাসিফিক ইন্টারন্যাশনাল লি. আদায় করেছে ২৭৭০ কোটি টাকা। সম্পদ ৪১০ কোটি। আদায়সহ সম্পদ ৩১৮০ কোটি টাকা। ফাঁকি ৬৩৬ কোটি টাকা। প্যাসটিস করপোরেশন লি. আদায় করেছে ৩১৫০ কোটি টাকা। সম্পদ ৩৮০ কোটি। আদায়সহ সম্পদ ৩৫৩০ কোটি। ফাঁকি ৭০৬ কোটি। সুফি এন্ড ব্রাদার্স আদায় করেছে ২৩০ কোটি টাকা। সম্পদ ১৬০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ৩৯০ কোটি। ফাঁকি ৭৮ কোটি টাকা। সী কোস্ট শিপিং এন্ড ট্রেডিং লি. আদায় করেছে ২৮৯০ কোটি টাকা। সম্পদ ৫১০ কোটি। আদায়সহ সম্পদ ৩৪০০ কোটি। ফাঁকি ৬৮০ কোটি টাকা। সীকণ এন্টারপ্রাইজ লি. আদায় করেছে ২৭৮০ কোটি টাকা। সম্পদ ৫১০ কোটি। আদায়সহ সম্পদ ৩২৯০ কোটি টাকা। ফাঁকি ৬৫৮ কোটি টাকা।
সী এন্টারপ্রাইজ প্রা. লি. আদায় করেছে ২৮৮০ কোটি টাকা। সম্পদ ৪৬০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ৩৩৪০ কোটি টাকা। ফাঁকি ৬৬৮ কোটি। ষ্টিভিউডর ফ্রেন্ডস সিন্ডিকেট লি. আদায় করেছে ২৭৯০ কোটি টাকা। সম্পদ ৪৩০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ৩২২০ কোটি। ফাকি ৬৪৪ কোটি টাকা। এমএসএ সার্ভিসেস লি. আদায় করেছে ২৮৯০ কোটি টাকা। সম্পদ ৩১৮ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ৩২০৮ কোটি। ফাঁকি ৬৪১ কোটি টাকা। ইউনিয়ন ট্রেডার্স আদায় করেছে ২৯১০ কোটি টাকা। সম্পদ ৪১১ কোটি। আদায়সহ সম্পদ ৩৩২১ কোটি টাকা। ফাঁকি ৬৬৪ কোটি টাকা। ইউনি ফ্রেন্ডস প্রা. লি. আদায় করেছে ২৮০ কোটি টাকা। সম্পদ ১৯০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ৪৭০ কোটি টাকা। ফাঁকি ৯৪ কোটি টাকা। সী-লিফট ষ্টিবিউডরিং সার্ভিসেস লি. আদায় করেছে ৩২৩২ কোটি টাকা। সম্পদ ৫১০ কোটি। আদায়সহ সম্পদ ৩৭৪২ কোটি। ফাঁকি ৭৪৮ কোটি টাকা। আর এ চৌধুরী এন্ড কোং লি. আদায় করেছে ৩৪৫০ কোটি টাকা। সম্পদ ৬১০ কোটি। আদায়সহ সম্পদ ৪০৬০ কোটি। ফাঁকি ৮১২ কোটি টাকা।
অপরদিকে, বন্দরে পাঁচটি বার্থ অপারেটর (জেনারেল কার্গো) ১৪ বছরে ১৬৯ কোটি মেট্রিক টন পণ্য খালাস বাবদ আদায় করেছে ১৩ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। এই প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাব, পে-লোডার ও যন্ত্রপাতির হিসাব রিটার্নে প্রদর্শন করেনি। এর মধ্যে এ ডব্লিউ খান এন্ড কোং লি. আদায় করেছে ৩৭৯০ কোটি টাকা। সম্পদ ২৬০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ৪০৫০ কোটি। ফাঁকি দিয়েছে ৮১০ কোটি টাকা। ফোর জুয়েল ষ্টিভিউডরিং সিন্ডিকেট লি. আদায় করেছে ৩৫২০ কোটি টাকা। সম্পদ ৫১০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ৪০৩০ কোটি টাকা। ফাঁকি ৮০৬ কোটি টাকা। ইউনাইটেড ট্রেডিং কোম্পানি আদায় করেছে ৩৮০০ কোটি টাকা। সম্পদ ৪১১ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ৪২১১ কোটি টাকা। ফাঁকি ৮৪২ কোটি টাকা। পঞ্চরাগ উদয়ন সংস্থা লি. আদায় করেছে ৩৯০০ কোটি টাকা। সম্পদ ৫১০ কোটি। আদায়সহ সম্পদ ৪৪১০ কোটি টাা। ফাঁকি ৮৮২ কোটি টাকা। রুহুল আমিন এন্ড ব্রার্দাস আদায় করেছে ৩৮৫০ কোটি টাকা। সম্পদ ৫২০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ৪৩৭০ কোটি টাকা। ফাঁকি ৮৭৪ কোটি টাকা।
অপরদিকে, পাঁচটি বার্থ অপারেটর (কন্টেইনার) ১৪ বছরে পণ্য বোঝাই ও খালাস করেছে ৭ কোটি ৮০ লাখ মেট্রিক টন। যা থেকে বিল আদায় করেছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। সে হিসেবে বশির আহমদ এন্ড কোং লি. আদায় করেছে ৩১২০ কোটি টাকা। সম্পদ ৩৮০ কোটি। আদায়সহ সম্পদ ৩৫০০ কোটি টাকা। করফাঁকি দিয়েঠে ৭০০ কোটি টাকা। এভারেস্ট পোর্ট সার্ভিসেস লি. আদায় করেছে ২৭৮০ কোটি টাকা। সম্পদ ৪৩১ কোটি টাকা। ফাঁকি ৬৪২ কোটি টাকা। এফ কিউ খান এন্ড ব্রাদার্স লি. আদায় করেছে ২৫৮০ কোটি টাকা। সম্পদ ৩৭২ কোটি। ফাঁকি দিয়েছে ৫৯০ কোটি টাকা। এম এইচ চৌধুরী লি. আদায় করেছে ৩৩৩০ কোটি টাকা। সম্পদ ৫৮৯ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ৩৯১৯ কোটি টাকা। ফাঁকি ৭৮৩ কোটি টাকা। ফজলী সন্স লি. আদায় করেছে ৩২১০ কোটি টাকা। সম্পদ ৪৮০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ৩৬৯০ কোটি টাকা। ফাঁকি ৭৩৮ কোটি টাকা।
অপরদিকে, তিনটি টার্মিনাল অপারেটর (কন্টেইনার) ১৪ বছরে পণ্য বোঝাই ও খালাস করেছে ৬ কোটি ৫০ লাখ কন্টেইনার। সে অনুযায়ী বিল নেয়া হয়েছে ২৬ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড আদায় করেছে ১৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। সম্পদ রয়েছে ৫১০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ মূল্য ১৫ হাজার ২১০ কোটি টাকা। কর ফাঁকি দিয়েছে ৩০৪২ কোটি টাকা। এম এইচ চৌধুরী লি. আদায় করেছে ৮৩০০ কোটি টাকা। সম্পদ ৪৮০ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ৮৭৮০ কোটি টাকা। ফাঁকি ১৭৫৬ কোটি টাকা। ফজলী সন্স লি. আদায় করেছে ৩২০০ কোটি টাকা। সম্পদ ২৭৫ কোটি টাকা। আদায়সহ সম্পদ ৩৪৭৫ কোটি টাকা। ফাঁকি ৬৯৫ কোটি টাকা। অপরদিকে, ২৭টি লাইটারেজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১৪ বছরে নদী পথে পণ্য পরিবহন করেছে ১৬৯ কোটি মেট্রিন টন। সে হিসেবে বিল আদায় করেছে ৬৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। হিসাব অনুযায়ী ২৭টি প্রতিষ্ঠান আদায় করা বিল ও সম্পদের উপর মোট ২১ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, ৭১টি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ব্যাংকে ২৩৩২টি ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করে। এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকদের রয়েছে ১০টি লাইটারেজ জাহাজ। প্রতিষ্ঠান মালিকরা তাদের স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও আত্মীয়-স্বজনের নামে ১৪ বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করা এসব টাকার বেশিরভাগ করফাঁকি দেয়া। পাচার করা টাকায় দুবাই, হংকং, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালেশিয়া ও কানাডায় কেনা হয়েছে বাড়ি, গাড়ি, পেট্রোল পাম্প, মার্কেট, রিসোর্ট। এছাড়া প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা দেশের অভিজাত এলাকায় বাড়ি, ফ্ল্যাট, গাড়ি, হোটেল, রিসোর্টে বিনিয়োগ করা হয়েছে, যা প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করেনি।
এই বিষয়ে এনবিআরের একজন সদস্য বলেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ও মালিকের ফাইল খতিয়ে দেখলে ফাঁকি বের হবে। তবে পাচার হওয়া অর্থ আমরা তো হিসাব করতে পারবো না। অপরদিকে, করফাঁকি ও পাচারের বিষয়ে বাংলাদেশ শিপ হ্যান্ডলিং এন্ড বার্থ অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ফজলে ইকরাম চৌধুরী শেয়ার বিজকে বলেন, ‘ট্যাক্স অফিস ও বন্দর ভবনে গিয়ে খোঁজ নেন আমরা কত টাকা বিল উত্তোলন করেছি। তাতেই উত্তর পেয়ে যাবেন।’
সূত্র-দৈনিক শেয়ার বিজ (২৬.১২.২০২২)
###