কম করহার সুবিধার অপব্যবহার, ফাইল যাচাই হচ্ছে

মৎস্য ও পোল্ট্রি খাত

মৎস্য ও পোল্ট্রি খাত থেকে বড় আয় দেখিয়ে কম করহারের সুবিধা নেওয়া ব্যক্তিদের খোঁজে নেমেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি), আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট এবং বেশ কয়েকটি কর অঞ্চল সুবিধা নেয়া ‘আয়কর রিটার্ন’ যাচাই শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত অন্তত ১৫ জন করদাতার আয়কর রিটার্ন রিওপেন বা পুন:উম্মোচন করা হয়েছে। এ ছাড়াও এই ধরনের সুবিধা নেয়া করদাতার ব্যাংক স্টেটমেন্টের খোঁজ নেওয়া হয়েছে। এনবিআর সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

বর্তমানে ব্যক্তির আয়ের ওপর সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ হলেও মৎস্য খাতের আয়ের ক্ষেত্রে তা সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ হারে ধরা হয়। এনবিআরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কিছু রাজনীতিক, আমলা ও ব্যবসায়ী এই কম করহারের সুবিধা নিয়ে অবৈধ অর্থ বৈধ করেছেন।

সূত্রমতে, সম্প্রতি একটি বড় শিল্পগ্রুপের চার শীর্ষ কর্মকর্তার ব্যাংক হিসাবের খোঁজ করেছে আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট। এই চার কর্মকর্তা মৎস্য ও পোল্ট্রি খাতে আয় দেখিয়ে কমহারে কর দিয়েছেন। মৎস্য খাত থেকে আয় দেখিয়ে এই চারজন প্রায় ১৪০ কোটি টাকার কম করহারের সুবিধা নিয়েছেন।

আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের কমিশনার আবদুর রকিব বলেন, ওই চারজনের আয়কর ফাইল ও ব্যাংক হিসাবের তথ্য পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আমরা প্রয়োজনীয় আয় সংক্রান্ত কাগজপত্র চাইব, সরেজমিনে যাচাই করব এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে তথ্য নেব।

সূত্রমতে, মৎস্য ও পোল্ট্রি খাত থেকে বড় অঙ্কের আয় দেখিয়ে কর ছাড়ের সুবিধা নেওয়া আরও অন্তত ৩০ জনকে এখন একই পর্যালোচনার আওতায় আনা হয়েছে। সব মিলিয়ে অন্তত ১০০ জন ব্যক্তি তদন্তের আওতায় আছেন, যাদের বেশিরভাগই ৫০ কোটি টাকা বা তার বেশি আয় দেখিয়েছেন। এছাড়া, মৎস্য খাত থেকে বড় অঙ্কের আয় দেখিয়ে কর সুবিধা নেওয়ার অভিযোগে ১০ জন রাজনীতিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব খতিয়ে দেখেছে সিআইসি। তাদের মধ্যে রয়েছেন-ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

এনবিআরের হিসাব অনুযায়ী, মৎস্য খাত থেকে আয়ের প্রথম ১০ লাখ টাকা করমুক্ত। পরের ১০ লাখে ৫ শতাংশ, তার পরের ১০ লাখে ১০ শতাংশ এবং ৩০ লাখ টাকার বেশি আয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ হারে কর ধরা হয়। এছাড়াও, সাধারণ করদাতাদের ক্ষেত্রে করহার তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।

এনবিআর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী বাজেটে মৎস্য খাতের এই করছাড় সুবিধা বাতিল করে এই আয়কে সাধারণ করহারে নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে প্রান্তিক মৎস্যচাষিদের সুরক্ষা দিতে ৫ লাখ টাকা বা সর্বোচ্চ ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত রাখার প্রস্তাব থাকছে বলেও জানান তারা।

## কালো টাকা সাদা করা সংক্রান্ত আরো নিউজ
** কালো টাকা সাদা করেছেন মন্ত্রী রেজাউল
** ফ্ল্যাট কিনে কালো টাকা সাদা করেছেন সাবেক প্রেস সচিব
** কালো টাকার সুযোগ থাকলেও ট্যাক্স বাড়বে
** কালো টাকা সাদা করার বড় খাত মৎস্য চাষ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!