বিনা বাঁধায় দেশ ছাড়লেন শেখ হাসিনার চাচা

টাকা পাচার ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ থাকলেও আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচা শেখ কবির হোসেন রোববার সকালে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছেন। তার বিদেশ যাত্রা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)-এর ইমিগ্রেশন শাখার উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোয়াজ্জেম হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি (রোববার) (৮ জুন) সকালে একটি ফ্লাইটে দেশত্যাগ করেছেন। তাঁর বিদেশযাত্রায় কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল কি না—এমন প্রশ্নে ডিআইজি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

৮২ বছর বয়সী শেখ কবির হোসেন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের চাচাতো ভাই এবং সেই সূত্রে শেখ হাসিনার চাচা। গোপালগঞ্জ জেলা সমিতির সভাপতির দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষপদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি অধিকাংশ পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, তিনি অন্তত ২৩টি কোম্পানি, সংস্থা ও সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে—সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) চেয়ারম্যান, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান, সরকারি ন্যাশনাল টি কোম্পানির চেয়ারম্যান, কাবিকো লিমিটেড ও মাসুদা ডায়েরি নিউট্রিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বেস্ট হোল্ডিং (লা মেরিডিয়ান হোটেল)-এর স্বতন্ত্র পরিচালক।

তিনি আরও ছিলেন—বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) প্রেসিডেন্ট, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান, ইসলামী আই হাসপাতালের ভাইস চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব গভর্নরসের সদস্য এবং ‘হেলথ অ্যান্ড এডুকেশন ফর দ্য লোকাল আন্ডার প্রিভিলেজড পিপলস’ ও খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান।

প্রসঙ্গত, শারীরিকভাবে অক্ষম এবং স্বাভাবিক চলাফেরায় অক্ষম হলেও, শেখ হাসিনার চাচা শেখ কবির হোসেন দীর্ঘদিন ধরে ২৩টি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষপদে ছিলেন। এর মধ্যে ছিল শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একাধিক বিমা কোম্পানি, সেবা খাতের কোম্পানি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রভাবশালী অ্যাসোসিয়েশন।শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি বোর্ড মিটিংগুলোতে নিয়মিত উপস্থিত থাকতে পারতেন না। তবুও তার পরিচিতি ও ক্ষমতার প্রভাবে অনেক ব্যক্তি তার নাম ব্যবহার করে সরকারি বিভিন্ন সুবিধা নিয়েছেন। এমনকি কিছু কোম্পানি দখলের পর তাকে সামনে রেখেই কার্যক্রম চালানো হতো।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!